চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে মালিকের কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে ১২ লাখ টাকা তুলে আত্মসাতের পর ‘ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির নাটক’ সাজানোর একটি ঘটনা উদঘাটন হয়েছে। পুলিশ ওই কর্মচারিকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদে সিএন্ডএফ ভবনের এটিএম বুথ থেকে টাকাগুলো তুলে বান্দরবানে গিয়ে আত্মগোপন করেন ওই কর্মচারি। পরে তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার রহস্য উন্মোচন হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতার সুদীপ্ত সাহা টিংকু (৩৫) নগরীর আগ্রাবাদে আখতারুজ্জামান সেন্টারের দি সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের কর্মচারি। তার বাড়ি রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ও বাসা নগরীর গোসাইলডাঙ্গা এলাকায়।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সন্দ্বীপ জুয়েলার্সের মালিক প্রদীপ বণিক থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন— কর্মচারি সুদীপ্ত তার নির্দেশে তার ব্যবহৃত ৪টি এটিএম কার্ড ব্যবহার করে বুথ থেকে ১২ লাখ টাকা উত্তোলন করে বেরিয়ে আসার পর একটি কালো মাইক্রোবাসে ৪-৫ জন লোক এসে তাকে সেখানে তুলে নেয়। তাকে বান্দরবানে নিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে পাহাড়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মাইক্রোবাসে থাকা লোকজন নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে সুদীপ্তকে ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকাগুলো কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ প্রদীপের।
‘অভিযোগ পেয়ে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বান্দরবানে সুদীপ্তের অবস্থান নিশ্চিত হই। বুথের সামনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তিনি টাকা তুলে বের হয়েছেন। এসময় একটি কালো মাইক্রোবাস সেখানে এসে থামে। তবে তাকে সেখানে তোলা হয়নি। সেটা দেখে আমাদের মধ্যে সন্দেহ হয়। এর মধ্যে বান্দরবান থেকে তাকে ধরে রাতে ডবলমুরিং থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে যে, টাকাগুলো আত্মসাতের জন্য সুদীপ্তই এই নাটক সাজিয়েছে। সে নিজেই বান্দরবানে চলে গিয়েছিল।’
সুদীপ্তের কাছ থেকে ৪টি ব্র্যাক ব্যাংকের ভিসা কার্ড এবং নগরীর পাথরঘাটায় তার বোনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে ওসি মহসীন জানিয়েছেন।
‘সুদীপ্ত গত দুই বছর ধরে সন্দ্বীপ জুয়েলার্সে চাকরি করছেন। মালিকের খুবই বিশ্বস্ত কর্মচারি ছিলেন তিনি। এজন্য মালিক তার সব ভিসা কার্ড ও পাসওয়ার্ড তাকে দিয়ে রেখেছিলেন। সেই কার্ড ব্যবহার করে সুদীপ্তই টাকা তুলে আনতেন। বিশ্বস্ত কর্মচারি সুদীপ্ত এতবড় প্রতারণা করবে, সেটা মালিকও ভাবতে পারেননি’— বলেন ওসি মহসীন।