করোনায় সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে মানুষের পাশে আ.লীগ

ঢাকা: করোনারভাইরাসের (কোভিড-১৯) উচ্চ সংক্রমণকালে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, সিলিন্ডার, খাদ্যপণ্যসহ সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।

রোববার (১১ জুলাই) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ভার্চুয়ালিযুক্ত হয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, সাধারণ সম্পাদক, হুমায়ুন কবিরসহ অন্যরা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন— উপকমিটির সদস্য ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বাদল, আখলাকুর রহমান মাইনু, রফিকুল ইসলাম রনি, আব্দুল বারেক, মাহবুব রশিদসহ অনেকে।

করোনাকালে বিগত সময়ের ধারাবাহিকতায় আজকে (রোববার) ৩টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ৩০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১ লাখ ২০ হাজার উন্নত মানের মাস্ক, দাঁতের মাজন, অ্যান্টিসেপটিক সাবান, হ্যান্ডওয়াস, পিপিই-৩০০ এবং ১২’শ খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেট (চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজ) বিতরণ করা হয়।

এ সময় বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সফলভাবে করোনা মোকাবিলা করছি। মানুষকে সেবা করা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের শিখিয়ে গেছেন। মানুষের জন্য রাজনীতি করাও এক ধরনের ইবাদত। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে উন্নত জীবনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও ইবাদত। আজকে সারাবিশ্ব করোনায় আক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, একটি দল আছে— যাদের টাকা পয়সা আছে, ওষুধ কোম্পানি আছেন। তারা হাত গুটিয়ে থাকেন। তারা ফটোসেশন করেন। আর সরকারকে গালিগালাজ করেন। তারা কখনো মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেই ইতিহাস নেই। ১৯৯১ সালে বিএনপির ক্ষমতার সময়েও ঘূর্ণিঝড়ের সময় আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ট্রলারে ছুটে গেছেন দক্ষিণবঙ্গে। আর সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সংসদে বলেছিলেন— ‘যত মরার কথা ছিল ততো মরেনি।’ তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন— ‘কত মরলে আপনার ততো হবে?’ আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের পাশে ছিল। এখনো আছে, আগামীতেও থাকবে বলে উল্লেখ করেন মতিয়া চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবা-মা হারানোর বেদনা বয়ে বেড়ান। আবার অন্যদিকে এমন একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার কথায় দলের নেতাকর্মীরা জীবন দিতে প্রস্তুত। সারাদেশে করোনায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্চাসেবক লীগ ও কৃষক লীগ কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে। খাদ্য বিতরণ, সবজি বিতরণ, অ্যাম্বুলেন্স  তৈরি করে রাখা, মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন করেছে। শেখ হাসিনা ৪০ বছরের রাজনীতিতে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে আছে, দলের নেতাকর্মী যতদিন বেঁচে আছে— ততোদিন এই দলের ক্ষয় নেই।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতারা যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিল। করোনার শুরু থেকেই মাঠে আছে। যতদিন করোনা থাকবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে।

সুজিত রায় নন্দী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা শুরু থেকেই জনগণের পাশে ছিলাম। করোনা সুরক্ষা সামগ্রীসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছি। আওয়ামী লীগ ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর একটি দল আছে যেখানে ঘরে বসে মিথ্যাচার ও মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি। মানুষের সেবাই আমাদের লক্ষ্য।

বিতরণকৃত অক্সিজেন সিলিন্ডার ও কনসেনট্রেটরগুলো ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতাল, নড়াইল জেনারেলের হাসপাতাল, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদী খান ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খুলনা সদরসহ, কয়রা, পাইকগাছা, দীঘলিয়া, যশোরের চৌগাছা, সিআরপি সাভার, সুনামগঞ্জের ধর্মশালা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, শেরপুরের নলিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতি, শ্রীবর্দী, নীলফামারীর ঢীমলা, সাতক্ষীরা কলারোয়া, টাঙ্গাইলের মধুপুর, কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও যশোরের যুবসমাজের উদ্যোগে গঠিত শেখ ফজলুল হক মণি-আরজু মণি অক্সিজেন ব্যাংকে দেওয়া হয়।

আর খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীগুলো বিভিন্ন সংগঠন ও সামাজিক সংস্থার মধ্যে বিতরণ করা হয়। সংগঠন ও সংস্থাগুলো হলো— মহিলা শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী মটরচালক লীগ, বাস্তুহারা লীগ, যুব মহিলা লীগ, আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম, আমরা ঢাকাবাসী সংগঠন, সামাজিক সংগঠন ন্যাশনাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি, ঋষিমণি সম্প্রদায়, জাতীয় দাফন কমিটি, জাতীয় মহাশ্মসান কমিটি, ডিজিটাল প্লাস ফাউন্ডেশন, উদীয়মান নারী ও শিশু কল্যাণ সংস্থা, আশ্রায়ন প্রকল্প শ্যামপুর, বিরুলিয়া, স্পেশাল চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ও আদমজী চালু সংগ্রাম পরিষদ।

সারাবাংলা/এনআর/এনএস

আওয়ামী লীগ করোনাভাইরাস খাদ্যপণ্যসহ সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ