‘এশিয়া প্যাসিফিক টেলিকম টাওয়ার কোম্পানি অফ দ্য ইয়ার’ জিতল ইডটকো
১১ জুলাই ২০২১ ২৩:৪১
ঢাকা: শীর্ষস্থানীয় সমন্বিত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান- ইডটকো গ্রুপ (ইডটকো) চলতি বছর টানা পঞ্চমবারের মতো ফ্রস্ট অ্যান্ড সালিভানের ‘এশিয়া প্যাসিফিক টেলিকম টাওয়ার কোম্পানি অফ দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। সম্মানজনক এই পুরস্কারের পাশাপাশি টাওয়ার এক্সচেঞ্জের বরাত দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ টাওয়ার কোম্পানির র্যাংকিংয়ে জায়গা করে নেওয়ার কৃতিত্বও অর্জন করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এই দুই বড় প্রাপ্তির বিষয়ে ইডটকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদলান তাজুদিন বলেন, এই অর্জন বিভিন্ন দেশে আমাদের করা কাজেরই স্বীকৃতি। যেসব অঞ্চলে আমাদের কার্যক্রম বিস্তৃত রয়েছে, সেসব জায়গাতে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের ভূমিকা আমরা পালন করে যাচ্ছি। সেসব দেশে আমরা আগামী প্রজন্মের প্রযুক্তি, টেকসই উদ্ভাবন এবং সবচেয়ে ভালো উপায়ে কাজ করার মাধ্যমে আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এমনকি চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও তা অব্যাহত রয়েছে। চরম এই সংকটকালেও দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য নির্বিঘ্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ইডটকো টিম বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, ইডটকোতে আমাদের যে একটি অসাধারণ টিম রয়েছে, এই পুরস্কারপ্রাপ্তি তারই প্রমাণ। নিউনরমাল এই সময় কাজের নতুন ধারার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদেরকে বাধ্য করেছে। এর মধ্যেও যথাযথ শেয়ারযোগ্য অবকাঠামো নিশ্চিত করা এবং জাতীয় ডিজিটাল লক্ষ্যগুলো পূরণে আমাদের কর্মীরা তাদের কর্মনিষ্ঠা ও তৎপরতার সর্বোচ্চটি দেখিয়েছেন।
মহামারির নানা চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ইডটকো ২০২০ সালে বিভিন্ন দেশে ধারাবাহিকভাবে টেকসই নকশা উদ্ভাবন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি যেসব দেশে তারা দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে, সেসব জায়গাতে স্মার্ট সিটি ফার্নিচার এবং পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগুলো স্থাপনের লক্ষ্যে অংশীদারিত্বেরও উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া প্রতিটি সাইটে কার্বন নিঃসরণের হার ৫৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনার কথা জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বিভিন্ন দেশে সর্বোচ্চ পর্যায়ের টেকসই অবকাঠামোর উন্নয়ন ও চর্চা তারা চালিয়ে যাবে।
৩৪ হাজার ১০০ টাওয়ার পরিচালনার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বিশ্বের শীর্ষ ১০ টাওয়ারকো র্যাংকিংয়ে জায়গা করে নেয়ার খবরও ঘোষণা করেছে ইডটকো।
এ প্রসঙ্গে আদলান তাজুদিন আরো বলেন, এই অর্জনে আমরা বিশেষভাবে সম্মানিত বোধ করছি। ২০২১ সালে এ পর্যন্ত আমাদের উল্লেখযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে ফিলিপাইনে আমাদের প্রথম “বিল্ড টু স্যুট” টাওয়ার নির্মাণ, বাংলাদেশে বড় কয়েকটি চুক্তি সই এবং মালয়েশিয়ায় নির্মিতব্য সর্বোচ্চ স্কাই স্ক্র্যাপারে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার জন্য পারমোদালান ন্যাশোনাল বেরহাদ (পিএনবি) এর প্রযুক্তি অংশীদার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তি। মালয়েশিয়ার প্রস্তাবিত এই সুউচ্চ ভবনে পরবর্তী প্রজন্মের টেলিকমিউনিকেশনস সল্যুশনগুলো থাকবে। এ খাতে নিজেদের নতুন অবস্থান তৈরি করার চ্যালেঞ্জ হিসেবে আগামী কয়েক বছরে আমরা অন্তত তিনটি নতুন বাজারে প্রবেশ করতে চাই এবং ফাইবার ও স্মল সেল ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের প্রোডাক্ট পোর্টফোলিওতে নতুনত্ব আনতে চাই। পাশাপাশি কোম্পানিকে আরও বিশ্লেষণমুখী ও ডেটাকেন্দ্রিক নতুন কাঠামোতে রূপান্তরের লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। এছাড়া আমরা আমাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের রোডম্যাপ বাস্তবায়নেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই দুটো উদ্যোগই আজিয়াটার “ক্লাইমেট অ্যাকশন প্ল্যান” কে সমর্থন করছে। ২০২৪ সালের মধ্যে আমাদের পোর্টফোলিও দ্বিগুণ করাসহ অন্যান্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ টাওয়ারকোর একটি হওয়ার লক্ষ্যে গতিসঞ্চারে আমি দারুণভাবে আশাবাদী।”
ফ্রস্ট অ্যান্ড সালিভানের “এশিয়া প্যাসিফিক বেস্ট প্র্যাকটিসেস অ্যাওয়ার্ডস” শীর্ষ মানসম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যেগুলো ২০২০ সালে নিজেদের ব্যবসায়িক খাতে এবং ইন্ড্রাস্টির উন্নয়নে বেশি অবদান রেখেছে। ফ্রস্ট অ্যান্ড সালিভানের বিশ্লেষক দলটি কোনো একটি কোম্পানির উৎকর্ষতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুঙুঙ্খ পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে। প্রতি বছরের অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিগুলোর পর্যালোচনা এবং মূল্যায়নের কাজটি খুবই সতর্কতার সঙ্গে করা হয়, যেন এতে নতুন ট্রেন্ডগুলোসহ বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ভালোমত উঠে আসে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোকে প্রকৃত বাজার সক্ষমতার বিভিন্ন সূচকে মূল্যায়িত করা হয়, যেগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে- মার্কেট শেয়ার এবং মার্কেট শেয়ারে প্রবৃদ্ধি; পণ্য উদ্ভাবনে নেতৃত্ব, বিপণন কৌশল এবং ব্যবসা উন্নয়ন কৌশল।
সারাবাংলা/এসএসএ