শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের জন্য ৬ প্রস্তাবনা রবের
১১ জুলাই ২০২১ ২২:১৭
ঢাকা: বারবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন লেগে প্রাণহানির মাধ্যমে বারবার প্রমাণিত হচ্ছে যে দেশের কারখানাগুলো কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। এতে আরও প্রমাণিত হয়, শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকেও কোনোভাবেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না।
রোববার (১১ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আসম আবদুর রব এ কথা বলেন। এতে তিনি শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষা, উৎপাদন ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে ছয় দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
বিবৃতিতে আ স ম আবদুর রব বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে ক্রেতাদের চাপে কমপ্লায়েন্স ইস্যু নিশ্চিত করা হলেও দেশের অন্যান্য কারখানায় তদারকির বড় অভাব। কর্মক্ষেত্র নিরাপদ হওয়া এখন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ইস্যুকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এমনকি শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও কোথাও কোথাও তা বহাল রয়েছে। এ ধরনের বিপর্যয়ের আগে নিয়মিত তদারকি করলে অনেক মূল্যবান জীবন বেঁচে যেতে পারত।
জেএসডি সভাপতি বলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে ৫২ জনের মৃত্যু বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলেছে। কারখানার ভবন নির্মাণে প্রচণ্ড অনিয়ম, শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের অভাবসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও নজর রাখছে। পোশাকশিল্পের বাইরে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটায় অন্যান্য শিল্প কারখানার দিকেও নজর যাচ্ছে।
আ স ম আবদুর রব বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ রাখতে দেশের সব কারখানায় জরুরি তদারক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। নয়তো এসব ঘটনায় পোশাক শিল্পের ওপরও বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে, যার পরিণতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া কারখানাগুলো বিল্ডিং কোড মেনে নির্মিত হয়েছে কি না এবং তা পরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়মকানুন অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, অগ্নিদুর্ঘটনায় পড়লে জরুরি মুহূর্তে শ্রমিকরা নিরাপদে বের হওয়ার সুযোগ পান কি না— এসব বিষয় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও কারখানা মালিকদের খতিয়ে দেখতে হবে।
শ্রমিকদের মূল্যবান জীবন সুরক্ষা, উৎপাদন ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার, মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সংশ্লিষ্ট সবাইকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন আ স ম আবদুর রব। এ জন্য তিনি ছয় দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে—
সনাতনী পদ্ধতির পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে; (২) ভবনের স্পেস, ও লোক সংখ্যা অনুপাতে নির্গমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে ‘জীবনবান্ধব’ স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে; আধুনিক বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা স্থাপন ও নিয়মিত তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে; অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে; দেশে শিল্প কারখানা স্থাপন, পরিচালন ও পরিদর্শনের সঙ্গে যুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে; শিল্প-কারখানায় নিরাপদ কর্মপরিবেশের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর