Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়কে যাত্রীবাহী যান ছাড়া চলছে সবই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ জুলাই ২০২১ ১৯:৪২

ঢাকা: কঠোর বিধিনিষেদের ১৩তম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যাত্রীবাহী যানবাহন ছাড়া সবধরনের যান চলাচল করছে। যদিও ঈদকে সামনে রেখে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এদিন রাজধানীর কল্যাণপুর, শ্যামলী, শিশুমেলা, শেরেবাংলা নগর, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আসাদগেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সব সড়কে যাত্রীবাহী যানবাহন ছাড়া সবধরনের যান চলাচল করছে।

বিজ্ঞাপন

সকাল সাড়ে ৯টায় কল্যাণপুরের ফুটপাত ধরে চার ভিক্ষুককে দোকানে দোকানে ভিক্ষা চাইতে দেখা যায়। কাছে গিয়ে জানতে চাই লকডাউনে স্বাভাবিক সময়ের মতো ভিক্ষা পাওয়া যায় কি না? জবাবে আইনাল মিয়া নামের বৃদ্ধ এক ভিক্ষুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ আগের মতো টাকা-পয়সা দেয় না। এখন সবাই অভাবে আছে। কাম-কাজ করতে পারি না, তাই ভিক্ষা করি। সারাদিন ভিক্ষা করে দেড়শ টাকার মতো পাই। অসুস্থ স্ত্রী ও এক প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে মোহাম্মদপুরের ক্যাম্পে (জেনেভা ক্যাম্প) থাকি।

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দিলবার নামের আরেক অন্ধ ভিক্ষুক সারাবাংলা বলেন, ‘এখন খালি (শুধু) শুনি লকডাউন। সবারই অভাব। মানুষ আগের মতো দান-সদগা করে না। কী আর করুম, কাজ তো করতে পারি না। বাঁচার জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত পাততে হয়।’

সকাল ১০টায় শ্যামলীর শিশু মেলায় প্রচুর রিকশা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানকার মূল সড়কেও যানবাহনের চাপ ছিল। এ সময় ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতেও দেখা যায়। সেখান থেকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনের ফুটপাতে ঘোল (মাঠা) বিক্রি করতে দেখা যায় মাঝ বয়সী এক ব্যক্তিকে। লকডাউনে বেচাকেনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে প্রদীপ ঘোষ নামের ওই ঘোল ওয়ালা সারাবাংলাকে বলেন, ‘লকডাউনের প্রথম ৫-৬ দিন মাঠা বেচতে পারি নাই। কামাই ছাড়াতো ঘরে থাইক্যা চলা সম্ভব না। এখন আবার মাঠা বেচতাছি। তয় বেচাকেনা খুব কম। বেচাকেনা যে রহমই হউক, বাইচ্যা থাহার জন্য কিছু তো করা লাগব।’

বিজ্ঞাপন

১১টার দিকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের সামনে কয়েকশ মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে স্বল্প মূল্যে ডাল, তেল ও চিনি বিক্রি করা হয়। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মাঝ বয়সী খাদিজা খাতুন নামের এক নারীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। মানুষের বাসায় ছোডা (দৈনিক ভিত্তিতে) কাজ করি। এহন মানুষ বাসার কাম করাইতে চায় না। লকডাউন দেওনের পর থেইক্যা তিন ছেলে মেয়েরে নিয়্যা কষ্ট করতাছি।’ লকডাউনের এই সময়ে সরকারের কাছে ত্রাণের দাবি করেন তিনি।

সেখানে ট্রাকে বসে থাকা ডিলার মোজাম্মেল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখানে ২০০ মানুষকে দেওয়ার মতো ডাল, তেল, চিনি আছে। কিন্তু লাইনে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। সবাইকে দেওয়া যাবে না। একদিন পর পর আমাদের পণ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে নির্দিষ্ট স্থানে প্রতিদিন দেওয়া হয় না। লকডাউনের কারণে মানুষের ইনকামও কমে গেছে। এজন্য স্বল্পমূল্যের পণ্যের জন্য এত মানুষের ভিড়।’ ডিলারদের প্রতিদিন পণ্য বরাদ্দ দিলে সাধারণ মানুষের জন্য ভালো হতো বলে জানান তিনি।

১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনের চেকপোস্টে যানবাহনের জট তৈরি হতে দেখা যায়। সেখানে ট্রাফিক পুলিশকেও বেশ তৎপর ছিল। চেকপোস্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জন মো. মোখলেছুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকালের চেয়ে আজ রাস্তায় গাড়ির চাপ আরও বেড়েছে। সকালের দিকে যানবাহনের চাপ এখনের চেয়ে আরও বেশি ছিল। এই এলাকায় অনেকগুলো হাসপাতাল থাকায় যানবাহনের চাপ একটু বেশি হয়ে থাকে। তারপর আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এদিকে আজ (১৩ জুলাই) ঈদকে সামনে রেখে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। লকডাউন শিথিল করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা পরিচালনা এবং দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ছয়টা পর্যন্ত আরোপিত সকল বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো।’ অর্থাৎ এই সময়ে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। রাস্তায় চলবে গণপরিবহন। খোলা থাকবে হোটেল, রেস্তোরা, শপিং মলসহ সবধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

কঠোর বিধিনিষেধ রাজধানী

বিজ্ঞাপন

বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৩১

বাঘায় কৃষককে গলা কেটে হত্যা
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর