Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতায় রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ জুলাই ২০২১ ২০:০৯

ঢাকা: সরকারের পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার কারণেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) দুপুরে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ অভিযোগ করেন। ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: বিআরআই (বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) অথবা কোয়াড (কোয়াড্রাল্যাটেরাল সিকিউরিটি ডায়ালগ)’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় আয়োজন করে সাউথ এশিয়া ইউথ ফর পিস অ্যান্ড প্রোসপারিটি সোসাইটি (এসএওয়াইপিপিএস)।

বিজ্ঞাপন

ড. মঈন খান বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যার কোনো সমাধান আমরা করতে পারছি না। যদিও আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বই করি, কারও সঙ্গে শুক্রতা নয়। তাহলে কেন সবাই আমাদের শত্রু হয়ে গেলো? আজকের পৃথিবীতে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য এমনই যে, আমাদের সত্যিকার বন্ধু একটি রাষ্ট্র। পৃথিবীর দুইশ রাষ্ট্রের মধ্যে একটি রাষ্ট্র আজ আমাদের সত্যিকার বন্ধু- কথাটি সত্য। তাহলে আমার এই যে পররাষ্ট্র নীতি- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়, তা দিয়ে এই ৫০ বছরে আমাদের কী ফল দিল?’

তিনি বলেন, ‘এরকম লাখ লাখ রোহিঙ্গা ৭০ এর দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে এসেছিল, ১৯৯১ পরে এসেছিল। আমরা মনে আছে, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘে গিয়ে জাপানি ও চাইনিজ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিবের মধ্যস্থতায় সেই সমস্যাটির সমাধানে আমিও একজন ক্ষুদ্র অংশীদার ছিলাম এবং সমস্যার সমাধান হয়েছিল। এবার কেন হলো না? ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে পারছি না, একুল-ওকুল দুইকুল রাখতে গিয়ে কোনো কুলই রাখতে পারছি না- এটা আলোচনার বিষয় হতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

গণতন্ত্র-উন্নয়ন পাশাপাশি চলতে হবে মন্তব্য করে ড. মঈন খান বলেন, ‘আজকের সরকারের যে বক্তব্য- গণতন্ত্র পরে, উন্নয়ন আগে- সেই নীতিতে তো আমরা একমত হইনি। সেই নীতিতে একমত হলে আমাদের পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে ভিন্ন রাষ্ট্র করার কোনো কারণ থাকতে পারে না। আমরা এই নীতিতে বিশ্বাসী গণতন্ত্র ও উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলবে।’

‘আমরা বিশ্বকে একটি গ্লোভাল ভিলেজ হিসেবে দেখতে চাই, একটি শান্তির পৃথিবী হিসেবে দেখতে চাই, দ্বন্দ্ব পরিহার করে, হিংসা পরিহার করে, ধনী দরিদ্রের ব্যবধান দূর করে মানুষ যাতে সুন্দর জীবন-যাপন করতে পারে, সেই পৃথিবী দেখতে চাই। সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অত্যাবশ্যক। তার পাশাপাশি আমরা কথা বলার স্বাধীনতা চাই, গণতন্ত্র চাই’— বলেন ড. মঈন খান।

তিনি বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে দুইটা উদ্দেশ্য ছিল। একটি ছিল গণতন্ত্র, অন্যটি ছিল এদেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। আজকে ৫০ বছর পরে এসে আমি প্রশ্ন করতে চাই, এই দুইটির কোনটি আমরা অর্জন করতে পেরেছি? পাকিস্তানের ২২ ধনী পরিবারের বিরুদ্ধে আমরা বিদ্রোহ করেছিলাম। আজকে বাংলাদেশে সরকার ২২০০ ধনী পরিবার সৃষ্টি করেছে। আর কোটি কোটি মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষা হয়েছে। সেখানে দেখেছি- বিশ্বের যে কয়টি দেশে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে তার মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশ। আমরা কি এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম?’

এসএওয়াইপিপিএসের চেয়ারম্যান ড. সাজিদুল হকের সভাপতিত্বে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন, সাংবাদিক এবিএম শামসুদ্দোজা প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

টপ নিউজ পররাষ্ট্রনীতি বিএনপি ব্যর্থতা রোহিঙ্গা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর