Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রংপুর সিটির জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে, শর্ত ২টি

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুলাই ২০২১ ০৮:৩৩

ঢাকা: রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে স্বাস্থ্যসম্মত নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। ২১০ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সময় ধরা হয় সাড়ে তিন বছর। কিন্তু ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন ও অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি শেষ করা যায়নি এই সময়ের মধ্যে। প্রকল্প পরিচালক এর জন্য অন্যতম দায়ী করছেন গত বছরের আকস্মিক বন্যাকে। এ অবস্থায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য আরও একবছর সময় চাওয়া হয়েছে। সে সময় দিতেও সম্মত হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে তার জন্য দুইটি শর্তও আরোপ করে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র বলছে, গত ৩১ মে বিভাগীয় মূল্যায়ন কমিটির (ডিপিইসি) এক সভায় এই দুই শর্ত দিয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শর্ত দুইটি হলো— প্রকল্পের মেয়াদ আর বাড়ানো যাবে না, যাবতীয় কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে; এবং প্রকল্প সংশোধনের যৌক্তিকতার বিস্তারিত এবং বাড়তি সময়ের জন্য কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে দ্রুত সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরএডিপি) সংযোজন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিভাগীয় মূল্যায়ন কমিটির ওই সভার কার্যবিবণীতে বলা হয়েছে, সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা) জানান, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন ও অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ২১০ কেটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ ছিল এর। ড্রেনের ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্ত করার মাধ্যমে যানজট নিরসনসহ উন্নতর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা ছিল প্রকল্পটির উদ্দেশ্য। কিন্তু প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় প্রাক্কলিত ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে আন্তঃব্যয় সমন্বয় করে মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সে হিসাবে প্রকল্পটিতে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে কেন শেষ করা যায়নি— সভায় জানতে চাওয়া হয় প্রকল্প পরিচালকের (পিডি) কাছে। তিনি জানান, রংপুরে গত বছরের আকস্মিক বন্যার কারণে প্রকল্প এলাকায় প্রায় ছয় মাস কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এছাড়া কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণেও প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়েছে।

প্রকল্প সংশোধনেরও কিছু কারণ তুলে ধরেন পিডি। বলেন, প্রকল্পের আওতায় যেসব আরসিসি রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে এবং রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে, তাতে ব্যহৃত পণ্য ও সরঞ্জামের দাম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে। হালনাগাদ ইকোনমিক কোডও সংশোধন করা হয়েছে। তাই প্রকল্পটির সংশোধন প্রয়োজন।

ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ। সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর তিনি বলেন, প্রস্তাব অনুযায়ী প্রকল্পটি সংশোধনের সুপারিশ করা হচ্ছে। তবে ২০২২ সালের জুনের পর প্রকল্পের মেয়াদ আর কোনোভাবেই বাড়ানো যাবে না।

সভায় কার্পেটিং সড়কের পরিবর্তে আরসিসি সড়ক (রিজিড) নির্মাণের জানতে চাওয়া হয়। এর জবাবে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন মিয়া জানান, বন্যার কারণে প্রকল্পের আওতায় কার্পেটিং রাস্তা সব জায়গায় টেকসই হবে না। তাই কার্পেটিং রাস্তার পরিমাণ ১৫ দশমিক ৩২ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ১২ দশমিক ৫৯ কিলোমিটার রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে কর্পোটিং সড়ক নির্মাণ অঙ্গে ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কমে গেছে, কিন্তু  রিজিট পেভমেন্ট নির্মাণে ১৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা খরচ বেড়েছে।

রুহুল আমিন মিয়া আরও জানান, বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২ কিলোমিটারের জায়গায় ৭ দশমিক ৬৯ কিলোমিটার কাজ করতে হচ্ছে। এর জন্য ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং দু’টি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রকল্পের আওতায় পূর্ত কাজের অনুমোদিত ২১টি প্যাকেজের চুক্তি মূল্য মূল প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে কম পাওয়া গেছে। ফলে এখান থেকে কিছু অর্থ সাশ্রয় হবে, যা দিয়ে অতিরিক্ত তিনটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (পরিকল্পনা) আরও বলেন, নতুন প্রস্তাাবিত প্যাকেজের টেন্ডার ভ্যালু কম হওয়ায় কাজের গুণগত মানের ঘাটতি হবে কি না, তা জানা প্রয়োজন। এর জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, টেন্ডার মূল্য কমে গেলেও কাজের গুণগত মানের কোনো হেরফের হবে না।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

জলাবদ্ধতা নিরসন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন রংপুর সিটি করপোরেশন স্থানীয় সরকার বিভাগ স্বাস্থ্যসম্মত নগরী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর