বরিশালে শ্রমিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ১৭ রুটে বাস চলাচল বন্ধ
১৫ জুলাই ২০২১ ১৬:২৪
বরিশাল: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশাল নগরের রূপালীতে দুই গ্রুপ শ্রমিকদের সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৭ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি রূপাতলী বাস টার্মিনালে উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উভয়পক্ষের শ্রমিক নেতারা দাবি করেছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী বরগুনাগামী আব্দুল হক নামের এক যাত্রী জানান, বাসস্ট্যান্ডে কথা কাটাকাটি কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হতে দেখেছি, এবং এতে একজন জখম হয়েছেন।
শ্রমিকরা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের দুটি কমিটি নতুনভাবে গঠিত হয়। এরপর থেকে দুই গ্রুপ শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় ছোটখাটো মারামারি ও উত্তেজনার ঘটনা ঘটে আসছিল।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টার্মিনাল ভবনের নীচতলায় কাউন্টারের সামনে সুলতান মাহমুদ ও সহিদুল ইসলাম টিটু নেতৃত্বাধীন কমিটির শ্রমিকদের সঙ্গে পরিমল চন্দ্র দাস ও আহম্মদ শাহারিয়ার বাবুর নেতৃত্বাধীন কমিটির শ্রমকিদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপরই গোটা বাস টার্মিনাল এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে এবং বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ প্রত্যাহারের পর প্রথম দিনেই যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এদিকে বিক্ষোভের সময় বরিশাল পটুয়াখালী সড়কে বাস আড়াআড়ি ফেলে রাখলে গোটা রুপাতলী ও সাগরদী এলাকার কয়েক কিলোমিটার সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, সকালে জানতে পারি আমার কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ বাস চালাতে গেলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। এর কারণ জানতে চাইলে তর্ক বেধে যায়। একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এতে লাইন সেক্রেটারি হান্নান মৃধা কপালে আঘাত পান। এ ঘটনায় আমাকে বিনা কারণে দোষারোপ করা হচ্ছে। মূলত তারা একটি অবৈধ কমিটির হয়ে আমাদের স্ট্যান্ড দখল নিতে চায়। তারা যে কমিটি করেছে তার নেতা পরিমল চন্দ্র দাস ও শাহারিয়ার বাবু কেউ শ্রমিক নন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শ্রমিক ছাড়া শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি গঠন অবৈধ।
এদিকে বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের অপরাংশের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু বলেন, রূপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নে ২৩ বছর ধরে চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব করে আসছিল সুলতান মাহমুদ। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে মেয়র নতুন কমিটি গঠন করে দিয়েছে। সেই কমিটি উৎখাত করতে সকালে অতর্কিতভাবে বাসস্ট্যান্ডে এসে হামলা চালায় সুলতান মাহমুদের লেখকজন। এতে আমাদের লাইন সম্পাদক হান্নান মৃধা, মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাছির মৃধাসহ কমপক্ষে ৪ জন শ্রমিক আহত হয়।
রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, দীর্ঘদিন বাসস্ট্যান্ড দখল করে রাখার পর এখন সুলতান মাহমুদ কমিটি থেকে বাদ পড়ায় নবগঠিত কমিটির শ্রমিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। সুলতান মাহমুদকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত শ্রমিকরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্সসহ আমি আছি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, তবে বাস চলাচল শুরু হয়নি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হবে, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হবে।
সারাবাংলা/আইই