বাংলাদেশে কাক ও কোকিল মিলেমিশে একাকার: নানক
১৬ জুলাই ২০২১ ১৭:৩০
ঢাকা: আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘আজকের বাংলাদেশে কাক ও কোকিল চেনা বড় দুঃস্কর। সাদা আর কালো মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। বন্ধু এবং শত্রু কে, আমরা কিন্তু চিহ্নিত করতে পারছি না! কে আপন আর কে পর? তাও চিহ্নিত করতে পারছি না। তাই সামনে যত ষড়যন্ত্রই থাক ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে নেত্রীর নেতৃত্বে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এক/এগারোর সময়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান থাকা জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৫ সালে একটি সরকার ক্ষমতায় ছিল। তারা বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার দায়িত্ব নিয়ে সরকার গঠন করেছিল। দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলে দিয়ে পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশমাতৃকাকে নিয়ে আসার জন্য একটি সরকার গঠিত হয়েছিল।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সেদিন আমাদের লড়াইয়ের লক্ষ্য ছিল। শেখ হাসিনার লড়াইয়ের লক্ষ্য ছিল এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা কায়েমের জন্য। কিন্তু ষড়যন্ত্র কখনো থেমে থাকে না। এখানে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ভাই উপস্থিত নেই। যদি তার কথা না বলি তাহলে কৃপণতা করা হবে। তার কথা যদি না বলি তাহলে নিজের সঙ্গে আত্মপ্রবঞ্চনা করা হবে। সেদিন মায়া ভাইয়ের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। আমরা সেদিন লড়াই করেছিলাম।’
১৬ জুলাই শেখ হাসিনার গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তের কথা স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘সেদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আমাকে ফোন করে বললেন, নানক-আজম আমি চলে যাচ্ছি। আমি একটি চিঠি রেখে যাচ্ছি দেশবাসীর জন্য। এই চিঠিটি সারা বাংলাদেশে প্রচার করবে, আমাদের কর্মীদেরকে পৌঁছে দেবে। আমার আওয়ামী লীগের নেতারা কি পরিমাণ বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে সেটিই তোমরা দেখবা। তবে সতর্ক থাকো। আমি তোমাদের ওপর অর্থ্যাৎ কর্মীদের উপর ভরসা রেখে চলে গেলাম।’
গণতন্ত্র অর্জন করা যেমন সহজ, গণতন্ত্রকে রক্ষা করা তারচে য়ে অনেক অনেক কঠিন মন্তব্য করে নানক আরও বলেন, ‘কারাগার থেকে যখন নেত্রীকে আদালতে হাজির করা হয়, সেই আদালতে তিনি যে বক্তব্য রেখেছিলেন, সেই বক্তব্য ছিল সেনা শাসকদের উপর একটি চপেটাঘাত।’
সেই নেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উল্লেখ করে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নানক বলেন, ‘তার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এগিয়ে যাব। সামনে যত ষড়যন্ত্রই থাক ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্নভিন্ন করে আমরা এগিয়ে যাব। এই হোক আমাদের আজকের প্রত্যয়।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ প্রান্তে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন- দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ মহানগর নেতারা। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
সারাবাংলা/এনআর/এমও