Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদের পর বিধিনিষেধেও কারখানা খোলা রাখার দাবি এফবিসিসিআইয়ের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুলাই ২০২১ ১৭:৪৭

ঢাকা: ঈদুল আজহার পর সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও শিল্প কারখানা সচল রাখার দাবি জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। ওই সময় শিল্প কারখানা সচল না রাখতে পারলে পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়বে এবং রফতানিও ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কাও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এফবিসিসিআই সভাপতি এসব কথা বলেন। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) তৈরি পোশাক খাতের কারখানাগুলোর মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-ও একই দাবি জানিয়েছে। সেই দাবিতেই সমর্থন জানাল এফবিসিসিআই।

বিবৃতিতে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কোভিডজনিত বিধিনিষেধের আওতায় সব ধরনের শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং সাপ্লাই চেইন (সরবরাহ ব্যবস্থা) সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হবে। এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিশেষ করে খাদ্য-সামগ্রী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বোতলজাত পানীয়, নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি উৎপাদন বন্ধ থাকলে ভোক্তারা সমস্যার মুখে পড়বেন। পণ্য সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে দাম বাড়বে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হবেন।

আরও পড়ুন- ঈদের পর শিল্প-কারখানা খোলা রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি

রফতানি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এই নেতা বলেন, রফতানি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মতো ক্রয়াদেশ অনুযায়ী পণ্য রফতানি করা সম্ভব হবে না। এতে ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু তাই না, ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে লেট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা আছে। এক মাসের রফতানি শিডিউল বিঘ্নিত হলে পরবর্তী ছয় মাসের রফতানি শিডিউলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই সঙ্গে উৎপাদন বন্ধ থাকলে আমদানি করা কাঁচামাল অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। এতে আমদানিকারক ও উৎপাদক উভয়েই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানাগুলো বন্ধ রাখা হলে উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কারখানা ফের চালু করা অসম্ভব হয়ে পড়বেও বলে মনে করেন জমিস উদ্দিন। এ অবস্থায় এরই মধ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, প্লাস্টিক গুড্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারর্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরি-টাওয়েল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ রফতানি ও উৎপাদনে যুক্ত সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারগুলো উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে এফবিসিসিআইয়ের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বলে জানান তিনি।

এফবিসিসিআই সাভাপতি বিবৃতিতে বলেন, কোভিড বিস্তার রোধে জারি করা বিধিনিষেধে ওষুধ কারখানা নিয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। এ পরিস্থিতিতে ওষুধ কারাখানা বন্ধ রাখা হলে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। অন্যদিকে ট্যানারি কারখানা বন্ধ রাখা হলে ঈদুল আজহায় সংগ্রহ করা চামড়া সংরক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে। বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে সবাই বঞ্চিত হবেন— আশঙ্কা এফবিসিসিআই সভাপতি।

মহামারিতেও জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্যই উৎপাদন ব্যবস্থা তথা কারখানা চালু রাখা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে। জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ১০ শতাংশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। উৎপাদন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকেও সচল রাখতে উৎপাদন ব্যবস্থাকে চলমান রাখা জরুরি।

এ প্রেক্ষাপটে, শিল্প-কারখানাকে বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে চলমান রাখতে সরকারে প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

এফবিসিসিআই এফবিসিসিআই সভাপতি কারখানা চালু টপ নিউজ বিধিনিষেধ মো. জসিম উদ্দিন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর