দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি, দুশ্চিন্তায় গরু ব্যবসায়ীরা
১৭ জুলাই ২০২১ ১৯:০৮
রাজবাড়ী: পশুবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী পরিবহনের বাড়তি চাপে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট। ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত রয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। নদী পারের অপেক্ষায় রয়েছে অন্তত ৬ শতাধিক যানবাহন।
প্রচণ্ড গরমে পশুবাহী ট্রাক নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চালক ও ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘক্ষণ প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে থাকায় অনেক গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গরুগুলোকে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করে সুস্থ রাখার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (১৭ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে।
কুষ্টিয়া থেকে আসা গরুর ব্যাপারী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘গরমে গরুগুলোর মুখ দিয়ে লালা বের হয়ে যাচ্ছে। হাত পাখা দিয়ে গরুগুলোকে বাতাস দিচ্ছি, পানি দিচ্ছি। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। এভাবে অসুস্থ হয়ে গরু মারা গেলে আমাদের পথে বসতে হবে।’
যশোর থেকে আসা গরুর ব্যাপারী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দৌলতদিয়া ঘাটে আজ ভোর ৪টায় এসেছি। এখনও ফেরিতে উঠতে পারিনি। কখন যে ফেরির নাগাল পাবো জানি না। একদিকে গরমে গুরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অপরদিকে আমরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছি।’
এদিকে, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের গোয়ালন্দ মোড়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে আরও প্রায় ৩ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাকের সিরিয়াল রয়েছে। কোরবানির পশুর অতিরিক্ত ট্রাক ও নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
আটকে থাকা ট্রাক চালকরা জানান, ঘাট থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে খোলা আকাশের নিচে তাদের আটকে রাখা হয়েছে। যেখানে নেই খাবার হোটেল, টয়লেট ও গোসলের ব্যবস্থা। এছাড়া কবে কখন ফেরির নাগাল পাবেন সেটাও বলতে পারছেন না। এতে তাদের খরচ বাড়ার পাশাপাশি সময়মতো মালামাল পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। পশুবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি কিছু কিছু করে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করলে তাদের ভালো হতো। তাদের টার্মিনালে থাকতে দিলেও অনেক ভোগান্তি কম হতো।
যাত্রীবাহী বাসের চালকরা জানান, এখন ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ কম। মূলত যাত্রী আনতেই তারা ঢাকায় যাচ্ছেন। তবে সিরিয়ালে ঘণ্টার পর ঘণ্টার আটকে থাকার কারণে তারা সময় মত ঢাকায় পৌঁছাতে পারছেন না। ফলে শিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে তাদের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ব্যবস্থাপক মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘৫টি ফেরিঘাট সচল রয়েছে। তারপরও পশু ও যাত্রীবাহী পরিবহনের বাড়তি চাপে দৌলতদিয়া প্রান্তে লম্বা সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। চাপ সামলাতে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এমও