ঢাকা: দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড ১৯) সংক্রমিত ২০০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মৃত্যু হলো ১৮ হাজার ৩২৫ জনের। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৫৭৯ জন নতুন রোগী। এ নিয়ে দেশে ১১ লাখ ২৮ হাজার ৮৮৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেন।
মঙ্গলবার (২০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত সোমবার (১৯ জুলাই) করোনায় ২৩১ জনের মৃত্যু হয়। এটি ছিল সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে গত ১১ জুলাই দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এটি ছিল দ্বিতীয় রেকর্ড। শেষ ছয়দিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৭৩ জন রোগীর।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৫৭৯ জন নতুন রোগী। যা এর আগের দিন ছিল ১৩ হাজার ২৩১ জন। এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণ। এর আগে গত ১২ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল।
নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি ছিল ৬৩৯টি। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১৩০টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫২টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব ৪৫৭টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমনুা সংগ্রহ করা হয় ৪০ হাজার ৯৮২টি। এর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯ হাজার ৫১০টি। এ পর্যন্ত দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯০৯টি।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়- গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৯৯৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৯ লাখ ৫১ হাজার ৩৪০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের গড় ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। শনাক্তের বিপরীতে সুস্থতার সংখ্যা ৮৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। প্রতি ১০০ জন শনাক্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।
পুরুষ মৃত্যুর হার বেশি: গত ২৪ ঘণ্টায় পুরুষ রোগী মারা গেছেন ১১১ জন, নারী রোগী মারা গেছেন ৮৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ রোগী মৃত্যুর সংখ্যা ১২ হাজার ৬৬১ জন। নারী রোগী মৃত্যুর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৬৪ জন। পুরুষ রোগী মৃত্যুর শতকরা হার ৬৯ দশমিক ০৯ শতাংশ, নারী রোগী মৃত্যুর শতকরা হার ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ।
৬১-৭০ বয়সী মৃত্যুর সংখ্যা বেশি: গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া ১১ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন একজন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী রয়েছেন ছয় জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রয়েছেন ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রয়েছেন ২৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী রয়েছেন ৪৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী রয়েছেন ৬২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী রয়েছেন ৩৫ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী রয়েছেন আটজন, ৯১ থেকে ১০০ বছর বয়সী রয়েছেন একজন।
ঢাকায় বেশি মৃত্যু, খুলনা দ্বিতীয়: গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই খুলনায় মারা গেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী। বিভাগওয়ারী ঢাকায় মারা গেছেন ৫১ জন, চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৪৯ জন, রাজশাহীতে ১২ জন, খুলনায় ৫০ জন, বরিশালে সাতজন, সিলেটে ১১ জন, রংপুরে ১২ জন, ময়মনসিংহে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে মোট রোগীর মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৭১৭ জনের। এর শতকরা হার ৪৭ দশমিক ৫৭। মোট মৃত্যুর দিক থেকে চট্টগ্রাম বিভাগ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৪৮ জন রোগী। এরপরে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে খুলনা বিভাগ। খুলনায় মারা গেছে ২ হাজার ৩০৯ জন।
সংক্রমিতদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬৪ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন, বাসায় মারা গেছেন ছয়জন।
ভ্যাকসিন সংক্রান্ত তথ্য: বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের ডোজ কাউকেই দেওয়া হয়নি। সিনোফার্মের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ লাখ ২৯ হাজার ৮৯৩ জন। এ পর্যন্ত সিনোফার্মের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৬৬০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সিনোফার্মের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৭৩৩ জন। এ পর্যন্ত ভ্যাকসিনটির দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩ হা্জার ৩১৯ জন।
ফাইজারের প্রথম ডোজ নিয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন। এ পর্যন্ত ফাইজচারের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫০ হাজার ১০৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মডার্নার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫০ হাজার ৯০৪ জন। এ পর্যন্ত মডার্নার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ ৬৯ হাজার ৫৩৭ জন। কাউকেই এ পর্যন্ত মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়নি।