চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী-ছিনতাইকারীসহ গ্রেফতার ৪
২০ জুলাই ২০২১ ১৯:৪৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে পৃথক অভিযানে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী-ছিনতাইকারী, হত্যা মামলার আসামিসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র-মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ জুলাই) রাতে নগরীর ডবলমুরিং ও জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় পৃথক অভিযানে পুলিশ এ চার জনকে গ্রেফতার করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ডবলমুরিং থানায় গ্রেফতার দু’জন হলো- পুলিশের তালিকাভুক্ত আসামি গোলজার হোসেন প্রকাশ ওরফে পিস্তল গোলজার (৩৯) এবং কসাইবেশি ছিনতাইকারী শেখ ফরিদ (২২)।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানান, সোমবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর দাইয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোলজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডবলমুরিং থানার তালিকাভুক্ত এক নম্বর সন্ত্রাসী গোলজারের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, হত্যাপ্রচেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এবং বিস্ফোরক আইনে মোট ১৫টি মামলা আছে। বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত গোলজার ডবলমুরিং থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক। তার কাছ থেকে ১টি দেশিয় তৈরি পাইপগান, ১ রাউন্ড গুলি ও ১০৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
‘গোলজার সবসময় পিস্তল ও হাতুড়ি নিয়ে চলাফেরা করে। ২০১৮ সালে ক্যাবল ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এলাকায় টিপু ও সগীর নামে দু’জনকে গুলি করে। ২০১৩ সালে পুলিশকে লক্ষ্য করেও গুলি করে। গত ১১ জুলাই দাইয়াপাড়ায় রাশেদ নামে একজনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এক সপ্তাহ আগে আরও একজনকে হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। এলাকায় চাঁদাবাজি করে। এমনকি ভিক্ষুকের কাছ থেকে পর্যন্ত চাঁদা নেয়। সম্প্রতি গোলজার ইয়াবা ব্যবসার সাথে যুক্ত হয়েছে। টেকনাফ থেকে ইয়াবা এনে এলাকায় খুচরা বিক্রি করে। এজন্য তার অধীনে তিনজন খুচরা বিক্রেতা আছে’, বলেন ওসি মহসীন।
এদিকে কসাইয়ের ছদ্মবেশে ছিনতাইয়ের অভিযোগে সোমবার গভীর রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ মোড় থেকে শেফ ফরিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় তার কাছ থেকে ২টি ছুরি ও গরুর গোশত কাটার গাছের গুড়ি উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা আছে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শেখ ফরিদ পুলিশের তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী। দুইমাস আগে ছিনতাই করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়। জামিনে বেরিয়ে সে কৌশল পাল্টে ফেলে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সে কসাইয়ের বেশ ধারণ করে। সোমবার বিকেলে কসাই ভেবে তাকে একজন কোরবানির দিন গোশত কাটার জন্য ভাড়া করতে যান। ফরিদ তার মোবাইল-টাকা ছিনিয়ে নেয়। রাত ১০টার দিকে আগ্রাবাদ মোড়ে টহল পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া দিয়ে গ্রেফতার করা হয়।’
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মো. জসিম (৩৫) নামে একজনকে। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার আরাকান সড়কের আমতলী থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি দেশিয় তৈরি এলজি ও ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আবদুল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জসিম একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। তার বাড়ি নোয়াখালী। থাকে চট্টগ্রাম শহরের চান্দগাঁও মোহরা এলাকায়। তার বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, অস্ত্র ও দ্রুত বিচার আইনে তিনটি মামলা আছে। ভোরে আমতল এলাকায় ছিনতাইয়ের উদ্দেশে জড়ো হওয়ার পর পুলিশের গাড়ি দেখে পালানোর চেষ্টা করে। ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ইউছুপ নামে একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।’
এছাড়া সোমবার রাতে বোয়ালখালীর চরখিজিরপুর থেকে কলেজ ছাত্র ইমন হত্যা মামলায় খোরশেদ আলম (৪৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি আব্দুল করিম।
সারাবাংলা/আরডি/এমও