এই নম্বরগুলোতে ফোন করলেই পরিষ্কার হবে কোরবানির বর্জ্য
২১ জুলাই ২০২১ ১৩:৪৭
কোরবানির পশু জবাই শেষ হলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য সরানোর আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এ জন্য দুপুরের পর থেকে পুরোদমে শুরু হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রম। বর্জ্য সরানোর জন্য দুই সিটিতে নিয়োজিত থাকছেন ২১ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
এজন্য দুই সিটি কর্পোরেশনেই হটলাইন চালু করা হয়েছে। যে নম্বরগুলোতে ফোন করলেই আপনার বাসার সামনে বা এলাকা থেকে পরিষ্কার হবে কোরবানির বর্জ্য।
উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম পশুরহাট ভাটার থেকে এ কার্যক্রম শুরু করবেন। অপরদিকে দক্ষিণ সিটির মেয়র আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রম শুরু না করলেও একই সময় থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা মাঠে নামবেন।
জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১১ হাজার ৫০৮ জন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রায় ১০ হাজার কর্মী ঈদের দিন থেকে বর্জ্য অপসারণ করবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাশার মো. তাজুল ইসলাম জানান, ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে দুই লাখেরও বেশি পশু কুরবানি দেওয়া হচ্ছে। পশু কুরবানি দেওয়ার জন্য ৩০৭টি স্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর কুরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের জন্য ডিএনসিসির নিজস্ব ২ হাজার ৬৬৭ জন এবং অন্যান্য বেসরকারি ব্যবস্থাপনাসহ মোট ১১ হাজার ৫০৮ জন কর্মী নিয়োজিত করা হয়েছে। ডিএনসিসির বাসিন্দারা বর্জ্য–সম্পর্কিত যে কোনো তথ্য ০২-৫৮৮১৪২২০, ০৯৬০-২২২২ ৩৩৩, ০৯৬০-২২২২ ৩৩৪—এই নম্বরগুলোয় ফোন করে জানাতে পারবেন।
দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের জানান, ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকা ও পশুর হাটগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মাঠপর্যায়ে তদারকের জন্য ১০টি দল গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। করপোরেশনের আওতাধীন যেকোনো নাগরিক নিজ এলাকায় সৃষ্ট বর্জ্য–সম্পর্কিত তথ্যাদি প্রেরণ বা পশুর বর্জ্য অপসারণ–সম্পর্কিত সমস্যা সুরাহার জন্য কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ নম্বরে ফোন করে জানাতে পারবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হবে। বুধবার (২১ জুলাই) সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার প্রথম জামাতে অংশ নেন মেয়র তাপস। নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মেয়র তাপস ঢাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সুষ্ঠুভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন করুন, কোরবানি দিন। ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী, বর্জ্য সংগ্রহকারীর বিশাল জনবল আজ থেকেই কাজ করবে। কোরবানির বর্জ্য তাদের হাতে দেবেন, যাতে আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা শহর থেকে সব বর্জ্য অপসারণ করতে পারি। একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নগরী যেন ঢাকাবাসীকে উপহার দিতে পারি।’
কোরবানির ঈদের দিন দুপুর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করার লক্ষ্য ঠিক করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
বর্জ্য অপসারণে ‘ব্যাপক প্রস্তুতি’ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা ‘বড় চ্যালেঞ্জ’। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নগরবাসীর সহায়তা প্রয়োজন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের টার্গেট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য সরিয়ে নেওয়া। এ কাজে আমরা জনগণের সহযোগিতা চাচ্ছি। কারণ বর্তমানে কোভিড মহামারি চলছে, পাশাপাশি এডিস মশার উপদ্রবও বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ঢাকাবাসীকে আরও অনেক বেশি সচেতন হবে।’
মেয়র আতিক বলেন, ‘নগরবাসীকে বর্জ্য ফেলার জন্য ব্যাগসহ অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করবে সিটি করপোরেশন। এরপরও কোনো বাসার সামনে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে রাখা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’