Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শুক্রবার থেকেই কঠোর বিধিনিষেধ, বন্ধ থাকছে শিল্প-কারখানা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ জুলাই ২০২১ ১৩:০৬

ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে শুরু হচ্ছে কঠোর বিধিনিষেধ। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, এবারের বিধিনিষেধ হবে কঠোর থেকে কঠোরতম। সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন, শিল্প কারখানা সবকিছুই বন্ধ থাকবে।

বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে কঠোর বিধিনিষেধ চলমান থাকলে ঈদের ছুটি কাটিয়ে মানুষ কীভাবে ঢাকা ফিরবে? উত্তরে তিনি বলেন, যেহেতু সকল অফিস আদালত, তৈরি পোশাক শিল্প কারখানা, রফতানিমুখী সবকিছু তো বন্ধ থাকছে। তাই কারো অফিসে আসার প্রয়োজন নেই। সেজন্য শিথিলতা বাড়ানো হচ্ছে না। যারা বাড়িতে গেছেন, তারা এ পরিস্থিতি জেনেই গেছেন। তাদের ফিরতে হলে ৫ আগস্টের পরেই ফিরতে হবে।

তৈরি পোশাক শিল্প-কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে বলেন, এখনই এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যদি পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়, তাহলে বিবেচনা করা যেতে পারে। তাও এ মাসেই নয়।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এবারের বিধিনিষেধ হবে গতবারের চেয়েও কঠিন। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে এবারও পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি মাঠে থাকবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে সকলকে সরকারের এ নির্দেশ মানতে হবে। সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।

জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অপ্রয়োজনে কেউ বাইরে আসবেন না। বাইরে বের হতে হলে ডাবল মাস্ক পড়তে হবে। না হলে এটা বাড়তে থাকবে।

এর আগে গত ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়াতে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গত ১৩ জুলাই জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়:

বিজ্ঞাপন

১। সকল সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
২। সড়ক, রেল ও গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
৩। শপিং মল/মার্কেটসহ দোকান-পাট বন্ধ থাকবে।
৪। সকল পর্যটনকেন্দ্র, বিনোদন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার বন্ধ থাকবে।
৫। জনসমাবেশ হয় এমন ধরনের সামাজিক (বিবাত্তোর অনুষ্ঠান) (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পার্টি পিকনিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
৬। আদালতসমূহের বিষয়ে নির্দেশনা জারি করবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
৭। ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
৮। সরকারি সকল কর্মকর্তা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং ভার্চুয়ালি (ই- নথি, ই- টেন্ডারিং, ইমেইল, এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপ) এর মাধ্যমে দাফতরিক কাজ সম্পন্ন করবেন।
৯। আইনশৃংখলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি), খাদ্য শষ্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রয়, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, এনআইডি প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের নদী বন্দর, কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট, (সরকারি/বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি করপোরেশন/পৌরসভা (পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি, ফামাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি অত্যাবশ্যক সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
১০। বিভাগীয় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থবিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
১১। জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি, কাভার্ডভ্যান, কার্গো, ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবর্হিভূত থাকবে।
১২। বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র, নৌ, স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের আওতাবর্হিভূত থাকবে।
১৩। কাঁচাবাজার সকাল নয়টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা স্থানে বসতে পারবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটি নিশ্চিত করবে।
১৪। অতি জরুরি প্রয়োজন (ওষুধ, চিকিৎসা, নিত্যপ্রয়োজনীয়, দাফন, সৎকার) ব্যতিত বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। না মানলে আইনগত ব্যবস্থা।
১৫। ভ্যাকসিন কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে বের হওয়া যাবে।
১৬। খাবারের দোকান হোটেল রেস্তোরাঁ সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
১৭। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীরা তাদের বিমানের টিকেট দেখিয়ে গাড়িতে যাতায়াত করতে পারবেন।
১৮। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে নির্দেশনা দেবে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
১৯। আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
২০। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার নিয়োগ ও টকলেন অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ অধিদফতর এ বিষয়ে নির্দেশনা দেবে।
২১। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ নিশ্চিত করবে।
২২। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/এএম

কঠোর বিধিনিষেধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর