ঢাকা: প্রায় ৭০ বছর বয়সী সিনিয়র সিটিজেন সাফিয়া বেগম। গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় কায়দা করে তিনি ঢাকায় এসেছেন। রাজধানী ঢাকায় বেছে নিয়েছেন ভিক্ষার পথ।
ঈদের পরদিন সন্ধ্যায় সেগুনবাগিচার গলিতে এই ভিক্ষুকের সঙ্গে দেখা মেলে সারাবাংলার প্রতিবেদকের। এরপর আলাপচারিতা, প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে সাফিয়ার শেষ জীবনের যন্ত্রণার কিছু কথামালা।
গ্রামের উপায়হীন জীবন সম্পর্কে সাফিয়া বলেন, ‘কেউ তেরান (ত্রাণ) দেয় নাই। গতবার (লকডাউন) অনেক কষ্ট করেছি বাবা। ওই সময় তিন বেলা খেতে পারিনি।’ রাজধানী ঢাকায় এসে দুই-একটা পয়সা হাতে আসা শুরু করে সাফিয়ার।
ভিক্ষা শেষে সাফিয়া রাতে শুয়ে থাকেন ফুটপাতে কিংবা ঠাঁই নেন কোনো বাড়ির গেটের কাছাকাছি। গেটে দারোয়ান কিংবা সিকিউরিটি গার্ড থাকায় ক্লান্তি শেষে ঘুমটা কিছুটা নির্ভারও হয় তার। এরপর সকাল হলেই শুরু হয় ভিক্ষা, রাত শেষে আবার যাযাবর জীবনের ঘুম!
এদিকে ২৩ জুলাই থেকে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হচ্ছে। জনসচেতনতা বাড়াতে টহল পুলিশও হ্যান্ড মাইকিং করছে এলাকায় এলাকায়। এমন অবস্থায় বিধিনিষেধে সাফিয়া কি ভিক্ষা করতে পারবে, জানতে চাই পুলিশের কাছে।
সাফিয়া বলে, ‘এলাকাতেও তেরান পাইনি, ঢাকাতেও পাইনি। লকডাউনে কি ভিক্ষা করতে পারব বাবা?’
সাফিয়ার প্রশ্ন শুনে হতভম্ব হন দায়িত্বরত ওই পুলিশ কর্মকর্তা। সাফিয়াকে উত্তর দেন, ‘পারবেন।’
শাহবাগ থানার এসআই গোলাপ বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সন্ধ্যা থেকে মাইকিং করা হয়েছে। আমাদের সুস্থ থাকতে হলে, নিরাপদে থাকতে হলে অবশ্যই কঠোর বিধিনিষেধ পালন করতে হবে। সরকার যা করছে দেশ ও জাতির জন্যই কাজ করছে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনারা অহেতুক ঘোরাফেরা করে ঘর থেকে বের হবেন না। অকারণে কেউ বের হলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। গতবারের চেয়ে এবার বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মেনে চলতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে।’