বিধিনিষেধ: ঢাকায় ঢুকছে মানুষ, ঢাকা ছাড়ছেও
২৩ জুলাই ২০২১ ০৯:১৮
ঢাকা: ঈদুল আজহার আগে বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়ায় স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়েছিলেন অনেকেই। তবে শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোর থেকে বিধিনিষেধ শুরু হওয়ার কথা থাকায় এর আগেই রাজধানীতে ফিরতে তড়িঘড়ি করছেন তার। আবার বিধিনিষেধে সবকিছু বন্ধ থাকার আশঙ্কায় অনেকেই আবার যাচ্ছেন বাড়ি।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) মধ্যরাতে মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। টার্মিনালে দেখা গেছে, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদীসহ অন্যান্য এলাকা থেকে মহাখালীতে আসা প্রতিটি বাসই ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। আবার যাত্রী নামিয়ে দিয়েই সেগুলো ছুটে যাচ্ছে গন্তব্যস্থলের দিকে।
ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটের এনা পরিবহনের চালক রায়হান ইসলামের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যাত্রী কম। আর তাই মহাখালীতে যাত্রী নামিয়ে দিয়েই আবার গাড়ি ঘুরে যাচ্ছে ময়মনসিংহের দিকে। ফিরতি পথে কিছু যাত্রী পেলে ভালো। আর না পেলে ময়মনসিংহ গিয়ে আবার যাত্রী নিয়ে আসতে হবে।
প্রতি সিটেই যাত্রী বহনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রায়হান বলেন, কাউন্টারের যাত্রীরাই নিজেদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বাসে উঠছে পাশাপাশি বসার জন্য। এখানে তো আমাদের কিছু করার নাই।
এই এনা গাড়িতেই রাজধানী ছাড়ছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুব্রত পাল। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে অফিসে পার্টটাইম কাজ করতে হয়েছে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। আগামীকাল থেকে বিধিনিষেধ শুরু হলেও আমার ছুটি। আর তাই এই বিধিনিষেধে ঢাকা থাকা মানেই খরচ। তাই বাড়ি যাচ্ছি।
কিশোরগঞ্জ-ঢাকা রুটের অনন্যা পরিবহনের এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারিভাবে আগাম বিধিনিষেধের ঘোষণা দেওয়া হলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে তার মালিক। তাই ঈদের পরদিনই ঢাকা ফিরে আসতে হয়েছে।
বেশ কিছু যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলেও তা মানতে নারাজ টার্মিনালে থাকা বাস কাউন্টার কর্মকর্তারা।
এদিকে, অন্যদিকে কেবল বাস নয়, একইসঙ্গে পিকাপ ও অন্যান্য ছোট গাড়ি দিয়েও অনেকে ফিরছেন ঢাকায়। হঠাৎ যাত্রী ও গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রাস্তায়ও ছিল জ্যাম। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসতে থাকে।
উল্লেখ্য, দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তের হার উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এ বিধিনিষেধ ছিল ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। পরে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও ৭ দিন অর্থাৎ ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে বিধিনিষেধেও বিশেষ ব্যবস্থায় রপ্তানিমুখী পোশাক ও শিল্প কারখানা খোলা ছিল।
এরপর ঈদুল আজহার কারণে ১৫ জুলাই থেকে লকডাউন শিথিল করা হয়। ১৩ জুলাই জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে লকডাউন শিথিলের এ নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাস জনিত সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ঈদের ছুটি শেষে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর