Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিআরবিতে হাসপাতালের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি ১০১ বিশিষ্টজনের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুলাই ২০২১ ২০:৪৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের ‘আত্মঘাতী’ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক-সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ১০১ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

সিআরবি রক্ষার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা চট্টগ্রামের ফুসফুস ও বুকভরে নিঃশ্বাস নেবার স্থানটিকে ঐতিহ্য হিসাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পাহাড়ের মাঝে প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ করতে গেলে শতবর্ষী অনেক গাছ কাটা পড়ার পাশাপাশি এখানকার সবুজ নিসর্গ ধ্বংস হয়ে যাবে। হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাবিত স্থানে আছে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রবের কবর, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই মাটি শহীদের স্মৃতিধন্য। এই সিআরবিতে অনেকে শহিদ হয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। রেলের অনেক শ্রমিক-কর্মচারী মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে এই সিআরবি তথা পাহাড়তলী ছিল বিপ্লবের সূতিকাগার। সেইসব স্মৃতি সংরক্ষণে রেল কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অথচ শহিদের কবর, শহিদের নামে কলোনি, শহিদের নামে যে সড়ক সেই জমি তারা বেসরকারি হাসপাতালকে বরাদ্দ দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুশাসনকে কলঙ্কিত করতে কিছু আমলা ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করে বিশিষ্টজনদের বিবৃতিতে বলা হয়, সিআরবিতে হাসপাতাল হলে এর নেতিবাচক প্রভাব শুধু প্রকল্পের নির্দিষ্ট স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি শুধু শতবর্ষী বৃক্ষ না কাটার বিষয়ও নয়। সময়ের প্রয়োজনে প্রকল্প এলাকা ঘিরে নতুন নতুন দালান, অবকাঠামো, দোকানপাট, পার্কিং, ফার্মেসি, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের জন্য আবাসিক ভবন হবে। এর ফলে পুরো সিআরবি এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক বলয় হুমকির মুখে পড়বে।’

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ (ক) ধারা অনুসারে রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবে বলা আছে। সিআরবি এলাকায় প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সিআরবিতে যেকোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা মাস্টারপ্ল্যানের লঙ্ঘন। ১৯৯৯ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে চট্টগ্রাম নগরে মাস্টারপ্ল্যান কার্যকর করে সরকার। সেখানে সিআরবির মতো হেরিটেজকে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে।

এ অবস্থায় সিআরবিতে শুধু হাসপাতালই নয়, যেকোনো ধরনের স্থাপনা করা প্রকৃতি ও পরিবেশ বিনাশী আত্মবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড বলে বিশিষ্টজনেরা মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. অনুপম সেন, শহিদ জায়া বেগম মুশতারী শফি, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত, একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, পেশাজীবী নেতা ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, একুশে পদকপ্রাপ্ত বংশীবাদক ক্যাপ্টেন আজিজুল ইসলাম, আইনজীবী নেতা ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান, নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, চুয়েটের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম।

এছাড়াও আছেন- চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ, দৈনিক পূর্বদেশ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক, সাংবাদিক আবু সুফিয়ান, বিশ্বজিত চৌধুরী, ওমর কায়সার, রাশেদ রউফ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল আলম, প্রাবন্ধিক অজয় দাশগুপ্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনূস, চিত্রশিল্পী আহমেদ নেওয়াজ, শহীদের সন্তান গাজী সালেহ উদ্দিন, নাট্যজন শিশির দত্ত, অভিক ওসমান, প্রদীপ দেওয়ানজী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, কবি ফাউজুল কবির, কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দিন শ্যামল এজাজ ইউসুফী।

এছাড়া কবি সাথী দাশ, প্রফেসর ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, অধ্যাপক আবুল মনসুর, প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, জিনোবোধী ভিক্ষু, মাধব দীপ, শ্রমিক নেতা মৃণাল কান্তি চৌধুরী, আইনজীবী নেতা এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর, আবৃত্তিশিল্পী অঞ্চল চৌধুরী, নাট্যকার-নির্দেশক রবিউল আলম, স্থপতি আশিক ইমরান, অধ্যক্ষ হাসিনা জাকারিয়া বেলা, অধ্যাপিকা ফেরদৌস আরা আলীম, পরিবেশবিদ ড. ইদ্রীস আলী ড. আনোয়ারা আলম, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী মিহির লালা, নাট্য ব্যক্তিত্ব ম. সাইফুল আলম চৌধুরী, শিল্পী কল্পনা লালা, চিত্রশিল্পী দীপক দত্ত, নাট্যব্যক্তিত্ব কুন্তল বড়ুয়া, আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, আবৃত্তিশিল্পী আবদুল হালিম দোভাষ, রাশেদ হাসান, ডা.সরফরাজ খান বাবুল, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদারের নামও আছে বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে আরও যাদের নাম আছে- নাট্যকার রোসাঙ্গির বাচ্চু, স্বাচিপ নেতা ডা. মিনহাজুর রহমান, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ দবির উদ্দিন আহমদ, অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, শিল্পী আলাউদ্দিন তাহের, অধ্যাপক ভবরঞ্জন বণিক, নাট্য নির্দেশক মুনীর হেলাল, কবি ইউসুফ মুহম্মদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক ডা. চন্দন দাশ, চলচ্চিত্র নির্মাতা আনোয়ার হোসেন পিন্টু, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি ট্রাস্ট চট্টগ্রাম বিভাগের আহবায়ক আ ফ ম মোদাচ্ছের আলী, গণজাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী শরীফ চৌহান, অধ্যক্ষ কাবেরী সেনগুপ্ত, নারীনেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, চলচ্চিত্র নির্মাতা শৈবাল চৌধুরী, সাংস্কৃতিক সংগঠক শীলা দাশগুপ্তা, কবি রিজোয়ান মাহমুদ, উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মী কমল সেনগুপ্ত, কবি আবসার হাবিব, জ্যোতির্ময় নন্দী, আইনজীবী মুজিবুল হক, সাবেক সাংসদ সাবিহা মুছা, বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, সংস্কৃতিকর্মী মানসী দাশ তালুকদার, নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তী, চবি সিন্ডিকেট সদস্য শাহআলম নিপু, গবেষক জামাল উদ্দিন, সাংবাদিক ম. শামসুল হক, নাট্যকার সঞ্জীব বড়ুয়া, নাট্যজন অভিজিৎ সেনগুপ্ত, শিক্ষক নেতা রনজিত কুমার নাথ, নূরুল হক সিদ্দিকী, প্রদীপ কানুনগো, সৈয়দ লকিতুল্লাহ, ওসমান গণি এবং তাপস চক্রবর্তী।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

টপ নিউজ সিআরবি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দু’দিনে ভারতে ৯৯ টন ইলিশ রফতানি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৪

সম্পর্কিত খবর