‘গাড়ি বন্ধ, তারপরও হেঁটে আসছে মানুষ— এটা আশ্চর্যজনক’
২৪ জুলাই ২০২১ ২৩:২৫
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন দেওয়া হয় দফায় দফা। ২৩ জুলাই থেকে দেশে ফের শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। তবে এই বিধিনিষেধের মধ্যেও মানুষ গন্তব্যে পায়ে হেঁটে যাচ্ছে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার (২৪ জুলাই) ‘করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সংকট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এমন বিস্ময় প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলো এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সরকার চেষ্টা করেছে, আইন করেছে, জেলে ঢুকিয়েছে- তারপরও মানুষজন শোনেনি, বেপরোয়াভাবে ঘুরেছে। এ কারণে সংক্রমণ কিছুটা বাড়ছে। আর এটি সামনে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি। এখন লকডাউনের মধ্যে গাড়ি বন্ধ। তারপরও মানুষ হেঁটে চলে আসছে- এটা একটা আশ্চর্যজনক বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘করোনার এই ভয়াবহ প্রকোপে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাই না, দোকানপাট এবং ঈদের সময় গরুর হাটে মানুষের যাওয়া আসাতে নিশ্চয়ই সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা (ফলাফল) আমরা আগামীতে দেখতে পারব।’
ভ্যাকসিন দিতে না পারায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি। এখন আমাদের হাতে ভ্যাকসিন চলে এসেছে। আমাদের হাতে এখনও ১ কোটির বেশি ভ্যাকসিন আছে। আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে আরও ৩০ লাখ ভ্যাকসিন আসবে। তাতে আমাদের হাতে প্রায় দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন থাকবে। আগস্টে ফাইজারের আরও ৬০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসার কথা রয়েছে। সেটার কনফার্মেশন এখনও আমরা পাইনি। আগস্টে আমাদের হাতে প্রায় ২ কোটি ভ্যাকসিন থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘শহরের চেয়ে গ্রামে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এবারের সংক্রমণের প্রায় ৭৫ শতাংশই গ্রামে। গতবার যখন করোনা আঘাত করে তখন আমরা ইউরোপ কিংবা মধ্য প্রাচ্যের ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছি। তখন শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল বেশি।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভারতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পিকে যেতে প্রায় ৩ মাস সময় লেগেছে। আমি মনে করি, এরকমই একটা সময় লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সমস্যা হচ্ছে- ১০ জায়গায় সংক্রমিত হলেও চিকিৎসা দেওয়ার জায়গা কিন্তু একটা। তা হচ্ছে হাসপাতাল। ১০ জায়গা থেকে সংক্রমিত হয়ে মানুষ এক জায়গায় আসবে। সেজন্য আমরা সব জায়গায় সমালচনার মুখে পড়ি।’
তিনি বলেন, ‘১০ জায়গায় সংক্রমিত হবেন, আর হাসপাতালের বেড রেডি থাকবে- এটা তো সম্ভব না। ১০ গুণ বেশি সংক্রমিত হলে হাসপাতালের বেড তো কম পড়বেই। কিন্তু আমরা যেভাবে প্ল্যান করেছি তাতে এখন পর্যন্ত কম পড়েনি।’
সভায় আরও যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম, ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিপিএমসিএ সভাপতি এম এ মুবিন খানসহ দেশের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিনিধিরা।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম