ঈদের আগে-পরের ১১ দিনে সড়কে ২০৭ জনের মৃত্যু
২৬ জুলাই ২০২১ ১৬:২১
ঢাকা: ঈদুল আজহার আগে-পরের ১১ দিনে (১৪-২৪ জুলাই) দেশে ১৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০৭ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩৮৯ জন। নিহতদের মধ্যে ৪৬ জন নারী ও শিশু।
সোমবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো ‘ঈদুল আজহা উদযাপনকালে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এ তথ্য জানিয়েছে। ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজপোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২০ সালের ঈদুল আজহার আগে-পরে ১৪ দিনে ১৮৭টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত হয়েছিল। গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিলেন ১৬.৩৫ জন। এবারের ঈদুল আজহার আগে-পরে ১১ দিনে নিহত হয়েছেন ২০৭ জন। প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছে ১৮.৮১ জন। এই হিসেবে প্রাণহানি বেড়েছে ১৫.০৪ শতাংশ।
এতে বলা হয়, সবচেয়ে বেশি (৭৬টি) নিহতের ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। এতে ৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট নিহতের ৪২.০২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৮.১০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৪৩ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০.৭৭ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৩২ জন, অর্থাৎ ১৫.৪৫ শতাংশ।
এই সময়ে ৪টি নৌ দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছে। রেলপথে ২টি দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৫৯টি (৩৭.৩৪%) জাতীয় মহাসড়কে, ৬৬টি (৪১.৭৭%) আঞ্চলিক সড়কে, ১৪টি (৮.৮৬%) গ্রামীণ সড়কে এবং ১৯টি (১২.০২%) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২৭.১৭ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ২.৮৯ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-এ্যাম্বুলেন্স ৫.৪৩ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ৭.৯৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৮.২৬ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-লেগুনা) ১৭.৩৯ শতাংশ, নসিমন-করিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-চান্দেরগাড়ি ৯.৪২ শতাংশ এবং বাইসাইকেল ১.৪৪ শতাংশ।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৬.৯৬%, সকালে ১৮.৩৫%, দুপুরে ২২.১৫%, বিকালে ২৪.৬৮%, সন্ধ্যায় ১১.৩৯% এবং রাতে ১৬.৪৫%।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৩৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৮ জন। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে। ৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জন। একক জেলা হিসেবে রংপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। সেখানে ৫টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত হন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকাসহ ১০টি কারণ চিহ্নিত করেছে। দুর্ঘটনা কমাতে তারা দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশও করেছে। তার বলছে, সড়ক পরিবহন আইনের বাধাহীন বাস্তবায়ন অতি জরুরি।
সারাবাংলা/এমও