Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিজিটাল বাংলাদেশ মিশনের নেপথ্য যোদ্ধা জয়ের জন্মদিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুলাই ২০২১ ০০:৫৩

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ মিশনের নেপথ্যে কারিগর তিনিই।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধে জয় ছিনিয়ে আনার প্রত্যয়ে নানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রিয় এই নাতির নাম রেখেছিলেন ‘জয়’।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মায়ের সঙ্গে বাবার কর্মস্থল জার্মানি হয়ে ভারতে যান সজীব ওয়াজেদ জয়। সেখানেই কাটে তার শৈশব-কৈশোর-তারুণ্য। ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে ও পরে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন জয়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিন ওয়াজেদকে বিয়ে করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাদের একমাত্র সন্তান সোফিয়া ওয়াজেদ।

শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত নন জয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা তিনি। দলে সক্রিয় না হলেও ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি দলীয় রাজনীতিতে নাম লেখান। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। নির্বাচনি প্রচারণায় সাধারণ মানুষের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেছেন। কেবল নির্বাচনি প্রচারণা নয়, সরকার ও দলের তথ্যপ্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

২০১৬ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে দলে দায়িত্বশীল পদপ্রাপ্তি নিয়ে গুঞ্জনের ডালপালা ভারী হয়েছিল। কিন্তু সেসব গুঞ্জনের কোনোটিই আলোর মুখ দেখেনি। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে আসীন হওয়ার তুলনায় অন্তরালে থেকেই কাজ করে যাওয়াকেই নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তিনি।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগেই দেশ গঠনে তরুণদের মতামত ও পরামর্শ শুনতে ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ শীর্ষক দুই কর্মসূচি এরই মধ্যে সাড়া ফেলেছে। এছাড়া তরুণ উদ্যোক্তা ও নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করে তুলতে তরুণদের বৃহদাকৃতির প্ল্যাটফর্ম ‘ইয়াং বাংলা‘র সূচনাও করেন তিনি। জাতীয় রাজনীতি ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব তিনি।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা জাতিকে চমকে দেয়। ওই নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজও শুরু করে। পরে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ ফের সরকার গঠন করলে অবৈতনিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টার দায়িত্ব পান সজীব ওয়াজেদ জয়। শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে জয়ও দ্বিতীয় মেয়াদে একই দায়িত্বে আসীন হন। এর মাধ্য দিয়েই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণের প্রত্যয়ে কাজ করছেন তিনি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে গত বছরের ১৭ জুলাই আগারগাঁও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এক অনুষ্ঠানে জয় বলেন, মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য আমাদের টার্গেট প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা মোবাইলে থাকবে। আঙুলের সঙ্গে থাকবে। সাধারণ নাগরিকদের জীবনের সহযোগিতা করে সময় বাঁচানোর কাজ, এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের মিশন।

এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার নেপথ্যের এই কারিগরের সুনাম ছড়িয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তার পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। ২০০৭ সালেই ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাকে ‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ নির্বাচিত করে।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর অবমুক্ত করবে। ডাক বিভাগের এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি গণভবন প্রান্ত থেকে যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ডিজিটাল বাংলাদেশের আজকের অবয়ব সম্পর্কে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, আমাদের অনেকের অজান্তে বদলে গেছে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামো। ডিজিটাল বাংলাদেশের অবয়ব এখন আর কাউকে বোঝাতে হয় না। তার প্রমাণ করোনাকালে অব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থা। ডিজিটাল বাংলাদেশের এই নেপথ্যের নায়ক এবং আইসিটি খাতে নিঃশব্দে ঘটে যাওয়া বিপ্লবের স্থপতি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা হলেও সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিয়োগ কিন্তু অবৈতনিক। তিনি নিজের লব্ধ জ্ঞান বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে বিলিয়ে দিচ্ছেন।

ব্যারিস্টার বিপ্লব বলেন, ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় আমাদের আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জাতির সামনে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার একটি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। নেপথ্যে থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মসূচির সব কাজ করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। আজ আমরা করোনাকালে যেভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সব ধরনের কাজ করতে পারছি, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনযাপন করছি— ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কারণেই সেটি সম্ভব হয়েছে। পেছন থেকে কিন্তু এই ডিজিটাল বাংলাদেশের অবকাঠামো নির্মাণের সবকিছু করেছেন জয়। নীতিমালা প্রণয়ন থেকে শুরু করে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অগ্রণী রাষ্ট্রগুলোর উদাহরণ দেখে বাংলাদেশের করণীয় নির্ধারণ— এর সবকিছুই করেছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের এই দফতর সম্পাদক আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ডিজিটালাইজড করার পরিকল্পনাতেও কিন্তু অনুপ্রেরণা সজীব ওয়াজেদ জয়। পরিকল্পনাগুলোও তিনি করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রীর সন্তানই কেবল নন, তিনি একজন দেশপ্রেমিক মানুষ। আর সে কারণেই সরকার ও আওয়ামী লীগের ডিজিটাইজেশনের সব ধরনের কর্মসূচির পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও সক্রিয় তিনি। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের যারা ই-কমার্সে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, তারাও কিন্তু বিভিন্ন পরামর্শের জন্য সজীব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের কাছে যান এবং তার কাছ থেকে পরামর্শ নেন। তিনি খুব আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকেন যেন এই কাজগুলো হয়। তিনি আজ শুধু আওয়ামী লীগ নয়, এই সংগঠনের বাইরেও বিপুলসংখ্যক উদ্যোমী তরুণ, উদ্যোক্তা, শিক্ষিত তরুণ সমাজ— সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয় একজন ব্যক্তি। তিনি সময় পেলেই বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সিআরআইয়ের সহযোগিতায় তরুণদের সঙ্গে কথা বলেন। তরুণরা কী ভাবছে, তরুণরা কী স্বপ্ন দেখছে দেশ নিয়ে— এসব তিনি সবসময় জানতে চান এবং সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

সজীব ওয়াজেদ জয়

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর