জয়ের ‘সজীব’ নামটা আমার মায়ের দেওয়া: শেখ হাসিনা
২৭ জুলাই ২০২১ ১৯:৫৩
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের নামের ‘সজীব’ অংশটি রেখেছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব। এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এ তথ্য জানিয়েছেন জয়ের মা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োচিত ওই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিনি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে সংগঠনের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠনটি।
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুতে তার একমাত্র পুত্র এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়ের ৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবস। আমরা ছোটবেলা থেকে দেখেছি, ওই দিন সারা বাড়িতে পাকিস্তানের পতাকা তোলা হতো। স্কুল-কলেজ সব জায়গায় পাকিস্তানি পতাকা তোলা হতো। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ কোথাও পাকিস্তানি পতাকা তোলা হয়নি। মিলিটারি ডিটেকটর ইয়াহিয়া খান ঢাকায় যেখানে থাকতেন সেখানে আর ক্যান্টনমেন্টে ছাড়া আর কোথাও পাকিস্তানি পতাকা ছিল না। সারাদেশে তখন বাংলাদেশের পতাকা।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতেও সেই পতাকা তোলা হয় জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধু পতাকাটি তুলে নিয়ে আসেন। আমি সবসময় আমার আব্বার হাতে নখ নিজে কেটে দিতাম। আমি যখন হাতের নখ কাটছিলাম, তখন আব্বা আমাকে বললেন, নখ কেটে দে। আর কাটার সুযোগ পাবি কি না, জানি না। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। আমি তখন সন্তানসম্ভাবা। বাবা আমাকে বললেন, তোর ছেলে হবে এবং সেই ছেলে স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করবে। তখন বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে। ওর নাম ‘জয়’ রাখবি। আব্বার কথামতোই ছেলের নাম রেখেছিলাম জয়। এই নামটা আব্বার দেওয়া।
সজীব নাম রাখার নেপথ্যের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বন্দিখানার মধ্যে আমাদের জন্য তো আনন্দ কিছু ছিল না। আমার মা (বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব) ওই সময় বললেন, জয় আসার পরে অন্তত একটা কাজ পেলাম। আমরা যেন একটু সজীব হলাম। সেজন্যই মা সজীব নামটা দিয়েছিলেন জয়ের জন্য। ওই নামটাই রাখলাম।
জয়ের জন্ম থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যেদিন জয় হয় তার পরের দিন আমার খাবার দিতে দেয়নি। কারণ ওকে (পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গার্ড) আমি ধমক দিয়েছিলাম। আমি সারাদিন অভুক্ত ছিলাম। আমার যে আয়া রেখেছিলাম, হাসপাতাল থেকে সেই আয়াকে আসতে দেয়নি। আমার জন্য পানির ব্যবস্থা করতে দেয়নি। আমার ছোট ফুফু আমার সঙ্গে ছিলেন। তবে খুব লুকিয়ে-টুকিয়ে থাকতেন। এই অবস্থা ছিল। এই অবস্থার মধ্যে জয়ের জন্ম।
জয়ের শিক্ষাজীবনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেই সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) ভর্তির সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে পড়তে পারেননি। এ নিয়ে আক্ষেপ করেন শেখ হাসিনা।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সজীব ওয়াজেদ জয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ