Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আড়াই কোটি টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ প্রদীপ-চুমকির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ জুলাই ২০২১ ১৩:০৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্যপ্রমাণসহ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই সম্পদ স্ত্রী চুমকি কারণ’র নামে অবৈধভাবে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন তিনি। দুদকের দাখিল করা অভিযোগপত্রে প্রদীপের সঙ্গে ও তার স্ত্রীকেও আসামি করা হয়েছে।

দুদকের কৌঁসুলি মাহমুদুল হক সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন গত সোমবার (২৬ জুলাই) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। বুধবার (২৮ জুলাই) সকালে অভিযোগপত্রের অনুলিপি এসেছে দুদকের আইনজীবীর কাছে। ১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে আসামি হিসেবে আছেন এজাহারভুক্ত প্রদীপ ও চুমকি। সাক্ষী করা হয়েছে ২৯ জনকে।

গত বছরের ২৩ আগস্ট দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বাদি হয়ে দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলায় প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকা ‘ওসি প্রদীপ’ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ করে। আরও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়।

আইনজীবী মাহমুদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের পর দাখিল করা অভিযোগপত্রে প্রদীপের বিরুদ্ধে দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে সেই সম্পদ স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া উভয়ের বিরুদ্ধে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকার অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে দুদক।’

দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে দুদকের দাখিল করা অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানির সময় নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মাহমুদুল হক।

অভিযুক্ত প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তাদের নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি কারণ সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। তবে প্রদীপের সম্পদ নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে ‍চুমকি পলাতক আছেন।

গত বছরের (২০২০) ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ওই বছরের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন প্রদীপ কুমার দাশ। ওই মামলায় কক্সবাজারের আদালতে ইতোমধ্যে প্রদীপসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

সূত্রমতে, অভিযোগপত্রে চুমকি কারণ’র নামে নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটায় দুই কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ টাকা দামের ছয়তলা বাড়ি, পাঁচলাইশ থানার পশ্চিম ষোলশহর এলাকায় এক কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৬০০ টাকা দামের জমি এবং কক্সবাজারের ঝিলংঝা মৌজায় ১২ লাখ ৫ হাজার ১৭৫ টাকার একটি ফ্ল্যাটের বিষয় উল্লেখ আছে।

সম্পদ বিবরণীতে চুমকি কারণ নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে সম্পদ অর্জনের তথ্য দিয়েছিলেন। তবে অভিযোগপত্রে মাছের ব্যবসা থেকে চুমকির আয়ের কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক।

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

অবৈধ সম্পদ চুমকি কারণ টপ নিউজ প্রদীপ কুমার দাশ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর