কারখানা খোলার অনুমতি চেয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন
২৯ জুলাই ২০২১ ১৬:২৩
ঢাকা: দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রফতানিমুখী সব শিল্প কারখানা খুলে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবারও অনুরোধ জানিয়েছেন শিল্প কারখানার মালিকরা। সরকারপ্রধান দেশের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিবেচনায় নিয়ে অনুরোধে সাড়া দেবেন বলে আশা তাদের।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে এই অনুরোধ জানান বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার সময় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম সব ধরনের ব্যবসয়িক খাত থেকে। চলমান বিধিনিষেধে যেন সব ধরনের শিল্পকে কাজ করতে সুযোগ দেওয়া হয়। এটাই তার কাছে অনুরোধ করতে এসেছিলাম।’
তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। করোনা পরিস্থিতি, সংক্রমণ, মৃত্যু— সবকিছু মাথায় নিয়ে সরকারের কাছে যে অনুরোধ জানানো হয়েছে, সরকার এটি বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করছি।
ফারুক হাসান বলেন, ‘কেবল পোশাক শিল্প না, সব শিল্প প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আমরা এসেছি। এর প্রয়োজনীয়তা আপনারা জানেন। সব ধরনের শিল্পের সঙ্গে অনেক কিছু ইনভলভড। সেই কারণে আমরা এটি আবারও অনুরোধ করেছি, যেন একে (শিল্প কারখানা) লকডাউনের বাইরে রাখা হয়, বিষয়টি যেন বিবেচনা করা হয়।’
কবে থেকে কারখানা খুলে দেওয়ার কথা বলেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে পোশাক কারখানার মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট দিন নয়, যত দ্রুতসম্ভব আমরা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। বিধিনিষেধের মধ্যে ২৩ জুলাই থেকে সবকিছু বন্ধ আছে। এর আগে ঈদের কারণে বলা যায় ১৮/১৯ জুলাই থেকেই সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক দিন বন্ধ থাকার কারণে সবকিছুরই সাপ্লাই চেইনে এক ধরনের শর্টেজ হয়।’
তাদের সংকটের কথা তুলে ধরে ফারুক হাসান বলেন, ‘আমাদের এক্সপোর্ট আছে। তার সঙ্গে সঙ্গে লোকাল এবং পোর্টেও অনেক ইমপোর্টেড পণ্য আসে। জাহাজগুলো আনলোড করতে না পারায় পণ্যগুলো পোর্টে রাখার জায়গা থাকছে না। সে কারণে যদি কারখানাগুলো, শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো না খুলে পোর্ট থেকে কনটেইনারে মাল রিলিজ না করা হয়, তাহলে পুরো বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হয়ে যায়। তাই সবকিছু বিচার বিবেচনা করে সব ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেছি।’
পোশাককর্মীদের জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা নিয়ে সরকারের কাছে কোনো অনুরোধ করেছেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘আমরা এই অনুরোধও করেছি। সরকার ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছে এবং আমরা ঈদের আগেই ১৮ ও ১৯ জুলাই ৩০ হাজারের মতো কর্মীকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। শ্রমিকরা যখন কারখানায় থাকে তখন তারা ভ্যাকসিন দিতে নিরাপদ বোধ করে। কিন্তু গ্রামে গেলে তারা ভ্যাকসিন দিতে চায় না।’
এর আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে ঈদুল আজহা সামনে রেখে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। ওই সময় সিদ্ধান্ত হয়, ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনিষেধ জারি থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তবে ২৭ জুলাই করোনা সংক্রান্ত সরকারে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কঠোর বিধিনিষেধ ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর