‘বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন উদ্বোধন
৩০ জুলাই ২০২১ ১৩:৩৭
বাংলাদেশে ইউএসএআইডি’র উজ্জীবন প্রকল্প আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন হল। এর মাধ্যমে পরিবারগুলোকে বাল্যবিয়েতে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি প্রতিটি কন্যাশিশুর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের জন্য পারিবারিক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম ইউএসএআইডি’র ‘বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিরসনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৮-২০৩০) বাস্তবায়নের পদক্ষেপ আরও গতিশীল হবে বলে আয়োজকদের আশা প্রকাশ।
ওয়েবিনারে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে বাল্যবিয়ে রোধে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে ২০০৭-২০১৭ এর মধ্যে ১৬ বছর বয়সের আগে বিবাহিত মেয়েদের অনুপাত ৪৬ শতাংশ থেকে কমে ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। ১৮ বছর বয়সের আগে যারা বিয়ে করেছিলেন তাদের (বিয়ের আইনী বয়স) ৬৬ শতাংশ থেকে কমে ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে করোনা অতিমারিতে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে নিম্ন আয়ের পারিবারগুলোর আয় কমে যাওয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকাসহ একাধিক বিষয় রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ইউএসএআইডির উজ্জীবন এসবিসিসি প্রকল্পটি জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস দ্বারা বাস্তবায়িত হচ্ছে। সচেতনতামূলক এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাল্যবিয়ের কারণে অল্প বয়সে গর্ভধারণের ঝুঁকি এবং একই সাথে কন্যাশিশুদের উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগের সুফলগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে এই ক্যাম্পেইনটি বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি এবং বিদ্যমান ব্যবস্থাগুলোর মাধ্যমে সমাজের বাল্যবিয়ের ঘটনাগুলো প্রতিহত করা এবং ভুক্তভোগীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেতে উদ্বুদ্ধ করবে।
এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে কিশোর-কিশোরী, মা-বাবা, সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, নীতি নির্ধারক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের ১০ লক্ষ গণস্বাক্ষর প্রদান করতে আহবান জানিয়েছে।উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব, জনাব মো. সায়েদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাল্যবিবাহ দূরীকরণে বদ্ধ পরিকর। সরকার, উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি সংস্থা, বেসরকারি খাত এবং সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের সবাইকে এটি বাস্তবায়নের জন্য একসাথে কাজ করতে হবে।’ করোনা অতিমারির এই সময়ে দেশে বৃদ্ধি পাওয়া বাল্যবিয়ের সংখ্যা হ্রাস করতে সময়োপযোগী এই ক্যাম্পেইন শুরু করার জন্য ইউএসএআইডির উজ্জীবন এসবিসিসি প্রকল্পটিকে সাধুবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইউএসএআইডি-র জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা অফিসের পরিচালক জারসেস সিধওয়া বলেন, ‘বাল্যবিয়ে একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। বাল্যবিয়ের মত একটি জটিল সমস্যার অবসান ঘটানোর জন্য আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং এজন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে ইউএসএআইডি কাজ চালিয়ে যাবে এবং বাল্যবিয়ে নির্মূলের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করবে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে।’
এছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের পরিচালক, আমির হোসেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, মহিলা ও শিশু অধিদপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী, সাংবাদিক এবং অন্যান্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
সারাবাংলা/আরএফ/
ইউএসএআইডির উজ্জীবন এসবিসিসি প্রকল্প উজ্জীবন প্রকল্প জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে করণীয় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ