চট্টগ্রামে ৫৭ নমুনার ১৫টিতেই এডিস মশার লার্ভা
২ আগস্ট ২০২১ ১৮:৫৫ | আপডেট: ২ আগস্ট ২০২১ ২১:৩৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে চট্টগ্রামে। নগরের ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করে ৫১টি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এলাকা থেকে ৬টিসহ মোট ৫৭টি স্পট থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ১৫টি স্পটে শতভাগ এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একদল গবেষক।
এদিকে এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) সহযোগিতায় গত মার্চ মাসের ২৪ তারিখে মশক নিধনের জন্য কার্যকর ওষুধ নিশ্চিতকরণে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুককে সদস্য সচিব করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাপসী ঘোষ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এইচ এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ, ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী।
এছাড়াও প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও এই গবেষণা কার্যক্রমে অংশ নেন। গত ৫ জুলাই থেকে এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এই গবেষক দল। আগামীকাল সকাল সাড়ে ১১টায় এই গবেষণা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের আহ্বায়ক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।
গবেষণা দলের আহ্বায়ক ও প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘চসিক থেকে গত ২২ জুন বাজেট পাশ হলে আমরা ৫ জুলাই থেকে পুরোদমে এই গবেষণা কার্যক্রম শুরু করি। এরপর নগরীর ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করে ৫১টি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জোবরা গ্রামসহ ৬টি স্থান থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করি। এর মধ্যে ১৫টি স্পটে শতভাগ এডিস মশার লার্ভা শনাক্ত হয়েছে।’
‘এসব লার্ভা সংগ্রহের করে কিছুদিন রাখার পরে মশা উৎপত্তি হয়। মশাগুলো থেকে বুঝতে পারি যে, কোন কোন পজিশনে মশার লার্ভার মধ্যে এডিস মশার উপস্থিতি থাকে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) আমরা গবেষণা প্রতিবেদন জমা দেব। এই গবেষণা থেকে কার্যকর মশক নিধন ওষুধ সম্পের্কও জানা যাবে।’
সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী জানিয়েছেন, নগরীতে মশা নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরুর আগে চসিক গবেষণা প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছে। গবেষণা প্রতিবেদন পেলে এর সুপারিশের ভিত্তিতে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, প্রত্যেক উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে একজন রোগী মারা গেছেন। এর বাইরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ আলাদাভাবে রিপোর্ট করে। তাদের অধীনে গত মাসে (জুলাই) একজন রোগী মারা গেছেন। সে হিসেবে ২জন রোগী মারা গেছেন ও ৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
সারাবাংলা/সিসি/এসএসএ