গণটিকা কর্মসূচিতে দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতার আহ্বান কাদেরের
৪ আগস্ট ২০২১ ১৩:৪০
ঢাকা: দলীয় নেতাকর্মীদের সরকারের গণটিকা কর্মসূচিতে সহযোগিতা করার করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
আগস্ট মাস আসলে বিবেকের আয়নার বাঙালি হিসাবে নিজেকে অপরাধী মনে হয় মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্ট নরপিচাশ খুনিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের চরিত্র হননের পাঁয়তারা করে। হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। জাতি দীর্ঘ ২১ বছর বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। আজকে অনেকে গণতন্ত্র মানবাধিকারের কথা বলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর আমরা বিচার চাইতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বেনিফিসিয়ারি একটি চিহ্নিত মহল জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের আলামত দলিল দস্তাবেজ নষ্ট করে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
করোনা মহামারির এই সময়ে জনগণের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সকল প্রতিবন্ধকতাকে ডিঙ্গিয়ে নির্দিষ্ট বয়সসীমার উপরে সকলের জন্য টিকা নিশ্চিত করেছে। আগামী সাত থেকে ১৪ আগস্ট সারাদেশে গণটিকা দানের কর্মসূচি পালিত হবে। এই কাযক্রম সফল করার জন্য দেশে ১৪ হাজার টিকা কেন্দ্রে ১ কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করা হবে। আমাদের জীবন জীবিকা সচল রাখতে টিকা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। এই বছরের মধ্যে ১০ কোটি লোককে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানির প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন।
বিএনপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে করোনা মোকাবিলার সকল ব্যবস্থাপনা সুচারুরূপে সম্পন্ন করা হলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দ একের পর এক নির্লজ্জ মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে। জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, মিথ্যাবাদী এই গোষ্ঠীকে বরাবরের ন্যায় প্রত্যাখ্যান করতে হবে। বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি।
৭৫’র ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি এ জাতিকে আবার নেতৃত্ব শূন্য করার লক্ষ্যে তারেক রহমানের মদদে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খুনের রাজনীতি এবং খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা করাই বিএনপির দলীয় আদর্শে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আগস্ট মাস এলেই বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়। ইতিহাসের অবাঞ্ছিত সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বিএনপির তখন অন্তর্জ্বালা বেড়ে যায়। তাই তারা আগস্ট মাস এলেই নানান কূতর্কের জালে জড়িয়ে পড়তে চায়। ইতিহাসকে অস্বীকার করতে চায়। তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করে।
শোকাবহ আগস্ট মাসজুড়ে কর্মসূচি সীমিত পরিসরে কর্মসূচি পালন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সারাদেশে জেলা উপজেলা/ থানা, ইউনিয়ন ওয়ার্ড পযন্ত গণটিকা কার্যক্রম যাতে সফলভাবে সম্পন্ন হয় সে ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য আওয়ামী লীগসহ দলের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল স্তরে নেতাকর্মীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিজেরা টিকা গ্রহণ করবে এবং টিকা গ্রহণে সকলকে উদ্বুর্ধ করবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব পেয়ে আমরা জাতি হিসাবে ভাগ্যবান। যেকোনো সংকটকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করার অসম্ভব ক্ষমতার অধিকারি বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভুঁইফোঁড় সংগঠন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিরক্তি প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের বক্তব্য অলরেডি আপনার মিডিয়ায় গেছে এবং পত্রপত্রিকায় আওয়ামী লীগের বক্তব্য ছাপা হয়েছে। কাজেই এ নিয়ে আর প্রশ্ন করার কোনো বিষয় নেই। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর, স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি।
সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক,আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী মহিলা সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
সারাবাংলা/এনআর/এএম