পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা, ফিল্মি কায়দায় নিজেকে রক্ষা করলেন তরুণী
৬ আগস্ট ২০২১ ১৯:৫৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কারখানা ছুটির পর সহকর্মীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় সেই তরুণীকে তুলে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এক তরুণ। তবে ওই তরুণী পোশাককর্মী ধর্ষণের চেষ্টাকারী তরুণকে আঘাত করে পাহাড়ের ঢালুতে ফেলে নিজেকে রক্ষা করেছেন।
এদিকে, সহকর্মী তরুণের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই পাহাড় থেকে উদ্ধার করেছে সেই পোশাককর্মীকে। পাঁচ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে তরুণীকে উদ্ধারের পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে ধর্ষণের চেষ্টাকারী তরুণকেও।
সিনেমার কাহিনী মতোই এ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) গভীর রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার বালুছড়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার মুরাদ হোসেন (৩৩) নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার কুলগাঁও মাইজপাড়া এলাকার সাবের আহম্মদের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার শিকার তরুণী ও তার ছেলে সহকর্মী বায়েজিদ বোস্তামি থানার বালুছড়া এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কারখানা ছুটি শেষে ওই তরুণী ও তার সহকর্মী বায়েজিদের ফৌজি ফ্লাওয়ার মিলের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও নাজিরহাট রেললাইনের পাশ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় মুরাদ ও তার এক সহযোগী তাদের পথরোধ করেন। মুরাদের সহযোগী তরুণীর সহকর্মীকে একপাশে টেনে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে করতে কাছেই একটি পাহাড়ে নিয়ে যান। মুরাদ ওই তরুণীকে নিয়ে পাহাড়ের আরেকদিকে নিয়ে যান।
‘মারধরে আহত অবস্থায় সহকর্মী তরুণ কোনোমতে পালিয়ে মূল সড়কে চলে আসে। টহল পুলিশ দেখে তাদের বিষয়টি জানায়। আমরা দ্রুত মেয়েটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামি। কিন্তু পাহাড়ে প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশিতে তার খোঁজ মিলছিল না। একপর্যায়ে টর্চের আলো দেখে ও বাঁশির শব্দ শুনে তরুণী নিজেই একটি ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসেন। তার তথ্য অনুযায়ী আমরা আরও প্রায় তিন ঘণ্টা তল্লাশি করে ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন পাহাড়ের কাঁটাতারের বেড়ার পাশে পাহাড়ের ঢালুতে শোয়া অবস্থায় মুরাদকে পেয়ে তাকে গ্রেফতার করি।’
তরুণীর বরাত দিয়ে ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘তরুণীকে তুলে টেনেহিঁচড়ে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায় মুরাদ। সেখানে একটি ঝোপের আড়ালে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। উপায়ন্তর না দেখে মেয়েটি আত্মরক্ষার্থে মুরাদকে সজোরে লাথি মারে। মুরাদ পড়ে যায় পাহাড়ের ঢালুতে। কিন্তু দ্রুততার সঙ্গে আবার নিজেকে সামলে নিয়ে সে মেয়েটিকে খুঁজতে থাকে। মেয়েটি ততক্ষণে পাহাড়ের আরেক ঢালুতে গাছ ও ঝোপের আড়ালে আশ্রয় নেয়। মুরাদ মেয়েটিকে আর খুঁজে পায়নি।’
কিন্তু ততক্ষণে পাহাড়ের পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মুরাদ ঘটনাস্থল থেকে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে দূরে চলে যান এবং ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ওসি জানান।
তরুণীর বরাতে ওসি আরও জানান, তার বাসা নগরীর আকবর শাহ এলাকায়। কর্মস্থলে যাওয়ার সুবিধার জন্য বালুছড়া এলাকার আশপাশে বাসা খুঁজতে সহকর্মীকে নিয়ে বের হয়েছিলেন তিনি। মুরাদ ও পলাতক সহযোগীর বিরুদ্ধে তরুণী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর