চট্টগ্রামে ফিরল ‘বন্দুকযুদ্ধ’, প্রাণ গেল ডাকাতের
৭ আগস্ট ২০২১ ১২:২৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. কাজল ওরফে ধামা কাজল নামে একজন ডাকাত সদস্য নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের সীতাকুণ্ডের ৪ নম্বর ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ খবর নিশ্চিত করে র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. নাছির উল হাসান খান দাবি করেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহত ধামা কাজল কোরবানির গরুবোঝাই ট্রাকে ডাকাতির উদ্দেশে গুলি চালিয়ে চালককে হত্যার সঙ্গে জড়িত।
নিহত ধামা কাজলের (৫০) বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। ডাকাতদলের সদস্য কাজলের আস্তানা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় বলে র্যাব জানিয়েছে।
মেজর নাছির সারাবাংলাকে জানান, শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে একদল ডাকাত লিংক রোডে অবস্থান করছে খবর পেয়ে র্যাবের টিম সেখানে যায়। এসময় ডাকাতদলের পক্ষ থেকে তাদের লক্ষ্য করে প্রথমে গুলিবর্ষণ করা হয়। আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে র্যাব সদস্যরা। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে।
উপস্থিত স্থানীয় লোকজন কাজলকে শনাক্ত করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গরু লুটের জন্য ট্রাকচালককে খুনের ঘটনায় ছায়া তদন্তে নেমে আমরা তিনজনকে গ্রেফতার করেছিলাম। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে কাজলের নাম পেয়েছিলাম। ট্রাকচালক খুনের ঘটনায় কাজল জড়িত ছিল। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতির দুই মামলার তথ্য আমরা পেয়েছি।’
ঘটনাস্থলে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের তথ্যও দিয়েছেন মেজর নাছির।
গত ১৬ জুলাই ভোরে চট্টগ্রামের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিঙ্ক রোডের সীতাকুণ্ড এলাকায় ট্রাক চালক আব্দুর রহমানকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করা হয়।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, মাগুরা থেকে ১২টি গরু ট্রাকে নিয়ে আব্দুর রহমান ঘটনার আগেরদিন (১৫ জুলাই) চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। নগরীর বিবিরহাট বাজারে গরুগুলো বিক্রির জন্য নেওয়ার কথা ছিল। মাগুরা থেকে চাঁদপুর-নোয়াখালী হয়ে চট্টগ্রামে আসার পথে একটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। নোয়াখালীতে এসে আরেকটি ট্রাক ভাড়া করে সেখানে আটটি তুলে দেওয়া হয়। বাকি চারটি নিয়ে আব্দুর রহমান পেছনের ট্রাকে এবং অপর ট্রাকটি সামনে যাচ্ছিল। ডাকাতদল পেছনের ট্রাককে সংকেত দিয়ে থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গুলি করে। বুকে গুলিবিদ্ধ আব্দুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশ ও র্যাব মিলে ১০ আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই রাত নয়টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মারা যান সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনা তদন্তে গত ১ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলিকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে একই দিন আরেক চিঠিতে যুগ্মসচিব পদমর্যাদার চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ‘আরও শক্তিশালী’ চার সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়। একাধিক দফায় সময় নেওয়ার পর গত ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে ৮০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি।
ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলি ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতসহ ৯ পুলিশকে আসামি করা হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এএম