মহামারিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই চ্যালেঞ্জ মনে করছেন রব
৮ আগস্ট ২০২১ ২৩:১৯
ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে দেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে ১৮ কোটি মানুষের দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। খাদ্য নিরাপত্তায় ন্যূনতম সংকট দেখা দিলে রাষ্ট্র ও সমাজ বড় ধরনের সংকটে নিপতিত হবে। সুতরাং খাদ্য সংকট নিরসন ও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অবশ্যই কার্যকর উপায় উদ্ভাবন করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
রেবাবার (৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন জেএসডি সভাপতি রব। বিবৃতিতে তিনি খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণে পাঁচটি পরামর্শও দেন সরকারকে।
দেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবনে করোনাভাইরাসের অভিঘাতের কথা তুলে ধরে আ স ম আবদুর রব বলেন, করোনার ভয়াবহ তাণ্ডবের কারণে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই তাণ্ডব যেমন পড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর, তেমনি পড়েছে দারিদ্র্যের হারের ওপরও। বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার এখন ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ বর্তমানে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৫ কোটির বেশি। করোনার প্রভাব আরও বেড়ে যাওয়ার কারণে চলতি বছরেও গরিব মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, চাল-ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব আরও দুর্বিষহ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে। করোনায় মানুষের আয়-রোজগারের পরিমাণ একদম তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এর বিপরীতে যদি পণ্যের দাম অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকে তবে কয়েক কোটি কর্মহীন অসহায় জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। এমনিতেই এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি। চালের দাম বাড়ার প্রবণতায় চালের বাজারে চলছে অস্থিরতা। সরকার দ্রুত বিদেশ থেকে চাল আমদানি করার পরও চালের দর কমাতে পারেনি।
জেএসডি সভাপতি বলেন, সরকারকে নিরাপদ খাদ্য মজুত নিশ্চিত করার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা নিতে হবে। কারণ বিভিন্ন বাহিনীর রেশন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খোলাবাজারে ন্যায্য মূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি, কাবিখা, বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচিতে চাল বিতরণ করতে হয়। তাই সে অনুপাতে সরকারের ভাণ্ডারে খাদ্যের মজুত নিশ্চিত করতে হবে।
খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণে পাঁচটি উপায় নেওয়া যেতে পারে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন আ স ম আবদুর রব। এগুলো হলো— চাল আমদানি ও সংগ্রহের মাধ্যমে খাদ্যের নিরাপদ মজুত নিশ্চিত করা; স্থায়ী মজুরি কমিশন গঠন করা; আয় বৈষম্য দূর করা ও কর্মসংস্থান তৈরি করা; জরুরি ভিত্তিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; এবং ভাসমান জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আনতে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির সম্প্রসারণ করা।
খাদ্য সংকট ও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে না পারলে দেশ চরম সংকটে পড়বে বলে উদ্বগ জানান জেএসডি সভাপতি রব। বিবৃতিতে এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর