এদেশের মুক্তি-সংগ্রামের নেপথ্যের গেরিলা যোদ্ধা বঙ্গমাতা: শেখ পরশ
৯ আগস্ট ২০২১ ১৮:৫০
ঢাকা: যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, এদেশের মুক্তি-সংগ্রামের নেপথ্যে বড় গেরিলা যোদ্ধা ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার হৃদয় ছিল মহানুভবতায় ভরপুর, দুঃসময়ে ছিলেন ধৈর্যের মূর্ত প্রতীক, কিভাবে দুঃসময়ে মাথা ঠাণ্ডাা রেখে এগিয়ে যেতে হয় তা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবন থেকে আমরা শিখতে পারি।
সোমবার (৯ আগস্ট) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে যুবলীগের উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালসহ অন্যান্য জেলায় যুবলীগের অক্সিজেন ব্যাংকগুলোতে বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিণ্ডার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত। তিনি ছিলেন অতিথি পরায়ণ। ছয় দফা থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ— এই সময়ে জাতির পিতা যখন জেলে বন্দি থাকতেন তখন দিশাহারা ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পথপ্রদর্শক ছিলেন বঙ্গমাতা। শুধু তাই নয়, তিনি শিশুদের প্রতিও ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক। শিশুদের কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
নিজের স্মৃতির কথা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার শিশু বয়সে তার সঙ্গে মধুর স্মৃতি রয়েছে। একদিন আমার মায়ের সঙ্গে ধানমন্ডি- ৩২ এর বাড়িতে গেলে তাদের মুরগী এবং মুরগীর বাচ্চা আমার খুব পছন্দ হয়ে যায়। সেটি বঙ্গমাতা টের পেয়েছিলেন। কিন্তু মায়ের কারণে বাসায় আনতে পারি নাই। কাঁদতে কাঁদতে সেদিন বাসায় ফিরেছিলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে দেখি মুরগী ও মুরগীর বাচ্চা আমার বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন। এটাই ছিল শিশুদের প্রতি বঙ্গমাতার ভালোবাসা। আমি তাকে আপন দাদি বলে ডাকতাম। বঙ্গবন্ধুর প্রতিও ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা, তা তিনি জীবন দিয়ে প্রমাণ দিয়েছেন।
এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মাজেদা হাসপাতাল অক্সিজেন ব্যাংক, শেখ ফজলুল হক মণি ও আরজু মণি অক্সিজেন ব্যাংকে (যশোর) ১২০ কেজি ওজনের ১০টি করে সিলিণ্ডার এবং গাজীপুর মহানগর যুবলীগ, পাবনা জেলা যুবলীগ, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ, খুলনা মহানগর যুবলীগ, মাগুরা জেলা যুবলীগ, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবলীগ, সিলেট মহানগর যুবলীগ, ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগ, পটুয়াখালী জেলা যুবলীগ, কুড়িগ্রাম জেলা যুবলীগ, চাঁদপুর জেলা যুবলীগ ও শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের অক্সিজেন ব্যাংকে ৩০ কেজি ওজনের ৫টি করে অক্সিজেন সিলিণ্ডার দেন।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগকে অক্সিজেন দিয়ে পাশে থাকার জন্য আবুল খায়ের গ্রুপ ও নাভানা গ্রুপের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এই করোনার মহামারিতে নানাভাবে মানুষের পাশে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেন বলেই এতটা কষ্ট, এতটা ত্যাগ স্বীকার করে মানুষের সেবা করে চলেছেন। মনে রাখবেন শুধু মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করলেই মানুষ হওয়া যায় না। কর্মের মাধ্যমে মানুষ তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছায়। আপনারা মানুষের জন্য কাজ করে যান, আপনারাও সফল হবেন।
এসময় তিনি যুবলীগের টেলিমেডিসিন ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ দেন।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, এই করোনার মহামারিতে দেশের ডাক্তার সমাজের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আপনারা নিজ জীবন তুচ্ছজ্ঞান করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে মানুষের পাশে থেকে কাজ করছেন। আপনারাই করোনা যুদ্ধের অগ্রসেনানি।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এই মহামারিতে আপনারা আমাদের নির্দেশের অপেক্ষায় না থেকে নিজ বিবেকের তাড়নায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য যুবলীগের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন, রেশনিং পদ্ধতিতে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন, পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করছেন, করোনায় মৃতদের দাফন কর্মে অংশগ্রহণ করছেন, ফ্রি টেলিমেডিসিন ও এ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা কার্যক্রম। আপনাদের প্রতি সংগ্রামী সালাম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ, ডা. খালেদ শওকত আলী, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, ডা. মো. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফরিদ রায়হান, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুল হাই, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দফতর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহফুজুর রহমান উজ্জল, সহ-সম্পাদক আবির মাহমুদ ইমরান, তোফাজ্জল হোসেন তোফায়েল, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম, ডা. আওরঙ্গজেব আরু, কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. মফিজুর রহমান জুম্মাসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর, জেলা ও বিভিন্ন ওয়ার্ড নেতারা।
সারাবাংলা/এসএসএ