‘মোশতাক-জিয়া বেঁচে থাকলে তারা হতো বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রধান আসামি’
১০ আগস্ট ২০২১ ২২:৫৮
ঢাকা: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, ১৫ আগস্ট খুনি মোশতাক-জিয়া গংরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই হত্যা করেননি, বাঙালি জাতির স্বপ্নকেও হত্যা করেছিল। মোশতাক-জিয়া বেঁচে থাকলে তারাই হতো জাতির পিতা হত্যার প্রধান আসামি। তারা মারা যাওয়ায় তাদের বিচার করা যায়নি। এটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্য।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকালে তুরাগ থানার নেসারিয়া দাখিল মাদরাসা মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অসহায়-দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছে, ‘ঘাতক মোশতাক-জিয়া গংরা তখন অপরাজনীতি শুরু করেছিল, আইএসআই’র সঙ্গে মিলিয়েছিল। তারা ভেবেছিল মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করতে পারবে। তারা বোঝেনি আদর্শকে কখনও হত্যা করা যায় না। জাতির পিতার কন্যা দেশে এসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে একত্রিত করে দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সারাদেশের মানুষকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। মানুষের জন্য তিনি কাজ করছেন।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৭৫-এর খুনি ও বিএনপি জামাতের লক্ষ্য এক ও অভিন্ন। জাতির পিতার ঘাতকদের উত্তরাধিকার হিসেবে কাজ করছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ধারাবাহিকভাবে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারে ব্যস্ত। তারা ভ্যাকসিন নিয়ে মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। মির্জা ফখরুল গতকাল বললেন, তারা দুই কোটি মানুষকে করোনার সময় সাহায্য করেছেন। তারা কোথায় সাহায্য করেছেন? তারা ঘরে বসে বিবৃতি দেওয়া, বিদেশিদের দুয়ারে ঘুরে দেশকে নিয়ে মিথ্যাচার করা, ষড়যন্ত্র করা ছাড়া কিছুই করছে না। তাদের আরেক নেতা রুহুল কবির রিজভী মিথ্যার বাক্স নিয়ে বসে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ব্যস্ত।’
বিএনপির উদ্দেশে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘মানবিকতার উপরে কোনো রাজনীতি নেই। মানুষের পাশে দাঁড়ান। দেশকে ভালোবাসার রাজনীতি করুন। ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ছেড়ে, দেশের মর্যাদা নষ্টের রাজনীতি ছেড়ে মানবিক রাজনীতি সমর্থন করুন। বিদেশ নির্ভর রাজনীতি বন্ধ করুন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের পর বিএনপি-জামাত সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করেছে, নারী শিশু ধর্ষণ করেছে, খুন করেছে। আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি করিনি। জাতির পিতা আমাদের শিখিয়েছেন ভালোবাসার রাজনীতি, সৌহার্দের রাজনীতি।’
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণ, মাস্ক পরিধান করা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। লকডাউনে মানুষের কষ্ট হয় তা আমাদের নেত্রী জানেন। তবে জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই। লকডাউন মেনে চলায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘সৎ ও নিষ্ঠাবান রাজনীতি জাতিকে এগিয়ে নেয়। তৃণমূল থেকে সবস্তরে সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদরাই জনগণকে সঠিক পথ দেখায়। সুবিধাবাদী, লোভী, বর্ণচোরাদের কাছ থেকে সচেতন থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তার কাজ, অর্জনকে ম্লান হতে দেওয়া যাবে না। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিহত করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অসহায়-দুঃস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস এমপি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান এমপি, মতিউর রহমান মতি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দফতর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধরণ সম্পাদক আনিসুর রহমান নাঈমসহ বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম