‘৬৪ জেলায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ প্রয়োজন’
১১ আগস্ট ২০২১ ১৫:৩১
ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, দেশের ৬৪ জেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন অংকিত স্থান নিয়ে ৬৪টি আলাদা তথ্যচিত্র নির্মাণ করা প্রয়োজন। কারণ, যিনি আমাদের বাংলাদেশ নামক এই জাতিরাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা, যার সুযোগ্য ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, যার বর্ণাঢ্য জীবন ও আদর্শ বাঙালিদের জন্য অনুসরণীয়, সেই মহান নেতার সংগ্রামী জীবনের ৬৪ জেলায় স্মৃতির বিষয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
বুধবার (১১ আগস্ট) মৌলভীবাজারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচিহ্ন অংকিত স্থান নিয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসন নির্মিত ডকুমেন্টারি ‘খুঁজে ফিরি পিতার পদচিহ্ন’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।
পরিবেশমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ডকুমেন্টারিটি নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসন এবং কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল আইনিউজ ডট নিউজকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘সদ্য স্বাধীন দেশে ফিরে এসেই সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। একজন সত্যিকারের মানবদরদী নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু পিছিয়ে পড়া চা-শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টানে হাওর, পাহাড়-চা বাগান ও সমতল ঘেরা অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত মৌলভীবাজার জেলায় এসেছেন বারবার।’
তিনি ১৯৫৬, ১৯৬৪, ১৯৬৮, ১৯৬৯, ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালের বিভিন্ন সময়ে এখানকার মানুষের উন্নয়নে-উত্তরণে বারবার ছুটে এসেছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা রেলস্টেশন মাঠে আয়োজিত বিশাল এক নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দিতে এসেছিলেন। তখন আমি দশম শ্রেণির ছাত্র। তার ভাষণ শুনে অধিকাংশ মানুষের মতো আমিও আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী হই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আজ সমগ্র জাতি গভীর শোকের সাথে বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী পালন করছে। বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনা এবং স্বাধীন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আধুনিকায়ন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও সম্মানের মশাল প্রজ্বলন করেছিলেন তা এখন তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে আলোকিত করছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়, রোল মডেল।’
উল্লেখ্য, ডকুমেন্টারিতে মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্নের তথ্য ও ফুটেজ সংগ্রহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ মিনার, আনসার ফিল্ড (বর্তমান ডিসি অফিস), শাহ মোস্তফা সড়কে ওয়াপদা রেস্ট হাউস, মৌলভীবাজার ক্লাব, দেওয়ানি মসজিদ, জনমিলন কেন্দ্র, শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা-বাগানের ডাকবাংলো, নন্দরানী চা-বাগান, ডা. আলী সাহেবের বাসা, টি-রিসোর্ট, শহীদ মিনার, তৎকালীন সোনালি ব্যাংক প্রাঙ্গণ, বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগরের টেংরাবাজার ও কমলগঞ্জের শমসেরনগর থেকে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে দেখেছেন, বঙ্গবন্ধুর সাথে স্মৃতি আছে এমন ব্যক্তিবর্গের সাক্ষাতকারও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে ডকুমেন্টারিটি জেলার সাতটি উপজলার গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থানে প্রদর্শন করা হবে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, সংরক্ষিত নারী আসন-৩৬ এর সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান এবং সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম