বেসিক ব্যাংক: ৬ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি দুদকের ৫৬ মামলা
১২ আগস্ট ২০২১ ১০:৩৪
ঢাকা: বেসিক ব্যাংক থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা অনুসন্ধানে ২০১০ সালে মাঠে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান শেষে ৫ বছর পর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ৫৬টি মামলা করে দুদক। এরপর হতে চললো আরও ৬ বছর। এখনো আলোর মুখ দেখেনি সেই ৫৬টি মামলা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সারাবাংলাকে বলেন, বেসিক ব্যাংকের তদন্ত বলতে যতটুকু জানি শেষের দিকে।
তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়ে এই আইনজীবী জানান, বেসিক ব্যাংকের কিছু টাকা বিদেশে চলে গেছে। সেই টাকার কোনো গতি পাওয়া যাচ্ছে না। এটা নিয়েই তৈরি হয়েছে সব সমস্যা। কিছু টাকা ইতোমধ্যেই কমিশন রিকোভারি করেছে।
জানা গেছে, অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২১ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে রাজধানীর গুলশান, পল্টন ও মতিঝিল থানায় ৫৬টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় দুই হাজার ৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এসব মামলায় আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে। যার মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন ঋণ নেওয়া ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের। ৫৬ মামলার একটিতেও ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি।
তবে আবদুল হাই বাচ্চুকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর, দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৬ ডিসেম্বর। পরে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি বাচ্চুকে তৃতীয়বার জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এরপর আর তাকে ডাকাও হয়নি।
এদিকে বেসিক ব্যাংকের তদন্তের ধীরগতির বিষয়ে ২০১৭ সালের শেষ দিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বাচ্চুসহ তৎকালীন পর্ষদ সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে তদন্ত ও আদালতে চার্জশিট দেওয়ার জন্য দুদকের প্রতি নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষ না হওয়ায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতের ওই আদেশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। দুদক আইনে সর্বোচ্চ ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিলের নিয়ম থাকলেও এখনো মামলাগুলোর কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি এই বিষয়ে হাইকোর্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের ডেকে ক্ষোভও জানান। কিন্তু এরপরও নেই কোনো অগ্রগতি।
এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। কেননা এই বিষয়টি নিয়ে সব জায়গাতে আলোচনা হয়েছে। সংসদেও আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। হাইকোর্টও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ফলে এই বিষয়ে দুদকের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা নিরাশ নই, আশাবাদী। দুদক সফল হবে আর অপরাধীরা অবশ্যই সাজা পাবে।
আরও পড়ুন: বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি: কত টাকা উদ্ধার হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট
সারাবাংলা/এসজে/এএম