Monday 04 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুলাই মাসের শেষ ১৫ দিনের মৃত্যুসংখ্যা ছাড়িয়ে গেল আগস্টের ১৫ দিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ আগস্ট ২০২১ ২০:০০ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২১ ০১:৩৩

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৪ হাজার। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নেমে এলেও আগস্ট মাসের প্রথম ১৫ দিনের মোট মৃত্যু জুলাই মাসের শেষ ১৫ দিনের পরিসংখ্যানের চাইতে বেশি। জুলাই মাসের শেষ ১৫ দিনে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে তিন হাজার ২২০ জন মারা গেলেও আগস্ট মাসের প্রথম ১৫ দিনে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে তিন হাজার ৪৯০ জন। সর্বশেষ ৬ দিনে দেশে মারা গেছে এক হাজার ২৭৮ জন।

রোববার (১৫ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমিত ১৮৭ জন মারা গেছেন। দেশে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মারা গেছে ২৪ হাজার ১৭৫ জন।

বিজ্ঞাপন

সাম্প্রতিক সময়ের করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর তথ্যই বলছে, এই ভাইরাস কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। কেননা, সবশেষ ২৪ ঘণ্টার হিসাবসহ দেশে ৫২৬ দিনে মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার মানুষের। অথচ শেষ ১০০ দিনেই করোনা নিয়ে মৃত্যু ঘটেছে এর অর্ধেক অর্থাৎ ১২ হাজার ৩৪২ জন মানুষের।

অন্যদিকে কেবল জুলাই মাসেই মৃত্যু হয়েছিল ৬ হাজার ১৮২ জনের, গড়ে প্রতিদিন ১৯৯ জনেরও বেশি। জুলাই মাসের শেষ ১৫
দিনে অর্থাৎ ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে প্রতিদিন ২১৫ জন করে মারা গেলেও সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে আগস্টের ১৫ দিন। আগস্ট মাসের প্রথম ১৫ দিনেই করোনায় মারা গেছেন ৩ হাজার ৪৯০ জন, গড়ে প্রতিদিন ২৩৩ জনেরও বেশি!

১০ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত শেষ ছয় দিনে দেশে মারা গেছে এক হাজার ২৭৮ জন। তার আগের চার দিন অর্থাৎ ৭ থেকে ১০ আগস্টে মৃত্যু ঘটে এক হাজার ১১ জনের। দেশে এর আগে কেবল ৪ থেকে ৭ আগস্ট ও ৫ থেকে ৮ আগস্ট সময়ের মধ্যেও চার দিনে সহস্রাধিক মৃত্যু ঘটেছিল দেশে।

যেভাবে করোনায় মৃত্যু ২৪ হাজারে

দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ মার্চ। প্রায় একমাস পর ১৫ এপ্রিল করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০-এর ঘরে পৌঁছায়। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১০১ জন। একমাস পাঁচ দিন পর ২৫ মে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচশ ছাড়িয়ে যায়। এর ১৫ দিনের মাথায় ১০ জুন এই সংখ্যা স্পর্শ করে হাজারের ঘর। সে হিসাবে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের ৯৫ দিনে করোনায় মৃত্যু স্পর্শ করে হাজারের ঘর। এর ২৫ দিন পর ৫ জুলাই দুই হাজার ছাড়িয়ে যায় করোনায় মৃত্যু। এরপরের এক হাজার মৃত্যু হয় আরও দ্রুত— মাত্র ২৩ দিনে। ২৮ জুলাই তিন হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় করোনায় মৃত্যু। দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে চার এবং পাঁচ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে সময় লাগে ২৮ দিন করে। ২৫ আগস্ট চার হাজার ও ২২ সেপ্টেম্বর পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যায় মৃত্যু।

এরপর করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর গতি সামান্য কমে যায়। ২২ সেপ্টেম্বরের ৪৩ দিন পর ৪ নভেম্বর ছয় হাজার, এর ৩৮ দিন পর ১২ ডিসেম্বর সাত হাজার এবং তার ৪২ দিন পর ২৩ জানুয়ারি করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু পেরিয়ে যায় আট হাজারের ঘর এরপর মৃত্যু ৯ হাজারের ঘরে যেতে সময় লাগে ৬৭ দিন, এ বছরের ৩১ মার্চ দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৯ হাজার পেরিয়ে যায়। এরপর সংক্রমণ ভয়াবহ হয়ে উঠলে ২৫ এপ্রিলই করোনায় মোট মৃত্যু ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর ১৬ দিন পরে অর্থাৎ ১১ মে মৃত্যু ছাড়ায় ১২ হাজারের ঘর।

১১ জুন দেশে করোনায় মৃত্যু ১৩ হাজার ছাড়ায়। এর পরের হাজার মৃত্যুতে সময় লাগে ১৫ দিন। ২৬ জুন দেশে করোনায় মৃত্যু ১৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর ঠিক আট দিন পরেই ৪ জুলাই দেশে করোনায় মৃত্যু ১৫ হাজারে পৌঁছায়। এরপর ৪ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত মাত্র ছয় দিনে দেশে এক হাজার ৯২ জন কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

১০ থেকে ১৪ জুলাই, ১৫ থেকে ১৯ জুলাই, ২০ থেকে ২৪ জুলাই— এই সময়ের প্রতি পাঁচ দিনেই করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে এক হাজার করে। অর্থাৎ ১৪ জুলাই ১৭ হাজার, ১৯ জুলাই ১৮ হাজার ও ২৪ জুলাই করোনায় মৃত্যু ১৯ হাজার ছাড়ায়। এর চার দিনের মাথায় ২৮ জুলাইয়েই মোট মৃত্যু ২০ হাজারের ঘর অতিক্রম করে। এরপর ২ আগস্ট ২১ হাজার, ৬ আগস্ট ২২ হাজার ও ১০ আগস্ট করোনা সংক্রমণ নিয়ে মোট মৃত্যু ২৩ হাজারও ছাড়িয়ে যায়। ১৫ আগস্ট দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ২৪ হাজার।

করোনায় মৃতদের দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুবরণকারী ১৮৭ জনের ১০১ জন পুরুষ, ৮৬ জন নারী। এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ৯৪৩ জন পুরুষ ও আট হাজার ২৩২ জন নারী করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন। শতাংশ হিসাবে করোনায় মোট মৃত ব্যক্তির ৬৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ বা দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষ, ৩৪ দশমিক ০৫ শতাংশ নারী।

বিভাগভিত্তিক মৃত্যুর পরিসংখ্যান

করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুতে বরাবরই এগিয়ে ছিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ। সার্বিক হিসাবে অবশ্য এখনো মৃত্যুতে এগিয়ে এই দুই বিভাগ।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, ঢাকা বিভাগে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ১০ হাজার ৭২৩ জন, যা মোট মৃত্যুর ৪৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চার হাজার ৭৩৯ জন মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। এই বিভাগে মৃত্যুর হার মোট মৃত্যুর ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ তিন হাজার ২০৩ জন মারা গেছেন খুলনা বিভাগে, যা মোট মৃত্যুর ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।

এছাড়া রাজশাহী বিভাগে এক হাজার ৮০৬ জন (৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ), রংপুর বিভাগে এক হাজার ২১৩ জন (৫ দশমিক ০২ শতাংশ), সিলেট বিভাগে ৯৬৭ জন (৪ শতাংশ), বরিশাল বিভাগে ৮১৪ জন (৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ) ও ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন ৭১০ জন (২ দশমিক ৯৪ শতাংশ)।

সারাবাংলা/এসবি/এসএসএ

করোনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর