Monday 07 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশে দেশে জাতীয় শোক দিবস পালন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ আগস্ট ২০২১ ২৩:৫৩ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২১ ০০:২৯

ঢাকা: বাংলাদেশের মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শোক ও শ্রদ্ধায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করা হয়েছে। যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে প্রবাসী বাঙালিরা পালন করেছেন জাতীয় শোক দিবস।

বার্লিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দূতাবাসের সকল কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বিদেশি অতিথিদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সকালে মিশন চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরবর্তীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ই আগস্টের অন্যান্য সকল শহিদদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও স্মৃতির প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালন করে বিশেষ এই দিনের অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে সমবেত সকলের উদ্দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া জাতীয় নেতাদের বাণী পাঠ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এসময় জাতির পিতা এবং ১৫ আগস্টের সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন মহান নেতা যিনি আমাদের একটি মানচিত্র ও পতাকা দেওয়ার জন্যে তার সার জীবন উৎসর্গ করে গেছেন।

এসময় শোক দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে রাষ্ট্রদূত পুরস্কার বিতরণ করেন। এছাড়া জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

শোক দিবস পালন করেছে ইরাকের বাগদাদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে যথাযোগ্য র্মযাদায় জাতির জনককে স্মরণ করা হয়। সকাল ১১ টায় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা কালো ব্যাজ ধারন করেন। রাষ্ট্রদূত মো.ফজলুল বারী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শ নিয়ে আলোচনা করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের স্মরণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবন, আদর্শ নিয়ে ছড়া, কবিতা আবৃত্তি ও গানের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবিতে রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের সভাপতিত্বে যথাযোগ্য মর্যাদায় অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ বিমানের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ স্কুলের উপদেষ্টা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের নেতা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।

সকালে দূতাবাস ও বাংলাদেশ ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে শোক দিবস পালন কার্যক্রম শুরু হয়। জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ১৫ই আগস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা। এরপর অন্যান্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং ১৫ই আগস্ট ঘাতকদের বুলেটের আঘাতে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশী নির্মাণ শ্রমিকদের শিবিরে দূতাবাসের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিল ও উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে। দূতাবাসের আয়োজনে সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দূতাবাসের কর্মকর্তারা। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

আলোচনা সভায় হাই কমিশনার নূরে হেলাল সাইফুর রহমান বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে তাকে মুছে ফেলতে চাইলেও তিনি বাংলার আকাশে বাতাসে মাটিতে, বাঙালির চিন্তা চেতনায় মিশে আছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র কোনিদিন সফল হয়নি আর হবে না।

জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পরে আলোচনা সভায় জাতির পিতার আর্দশ ও তার কর্মময় জীবন লড়াই সংগ্রাম তুলে ধরা হয়।

এসময় রাষ্ট্রদূত সালাউদ্দীন নোমান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐন্দ্রিজালিক নেতৃত্বে এবং অভূতপূর্ব কূটনৈতিক তৎপরতায় স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশ পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ থেকে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও আদর্শ ধারন করতে তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। এদিন নেপালে থাকা তিনটি মাদ্রাসায় এতিম শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

জাতীয় শোক দিসব পালন করা হয় ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয় দূতাবাসে। সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্তস্তবক অর্পণ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দোয়া-মোনাজাত শেষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে রাষ্ট্রদূত মিজ্ সামিনা নাজ রাষ্ট্রপতি , প্রধানমন্ত্রি, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রির বাণী পাঠ করে শোনান। এদিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ভিয়েতনামের অসহায় মানুষদের মধ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৬ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করে। কনস্যুলেটর ফ্রেন্ডশিপ হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় ইস্তাম্বুলে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। কনস্যুলেটে সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

এরপর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। কনস্যুলেটর কর্মকর্তারা দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবংপররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করেন। এসময় বঙ্গবন্ধুর গৌরবময় জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম তার সূচনা বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শহিদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আপোসহীন নেতৃত্ব, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক দর্শনের বর্ণনা করে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাংকক যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করে। সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচী শুরু করেন। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতা, তার পরিবার ও ১৫ আগস্টের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী অনলাইনে এই কর্মসূচীতে যুক্ত হন।

রাষ্ট্রদূত মো. আব্দুল হাই তার বক্তব্যে জাতির পিতার সংগ্রামী জীবন, ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব, আত্মত্যাগ ও দূরদর্শী পররাষ্ট্রনীতি উপর আলোকপাত করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা হত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের মাধ্যমে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার মাধ্যমে বাঙালি জাতি অপরাধের গ্লানি মুক্ত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ

টপ নিউজ দেশে দেশে জাতীয় শোক দিবস পালন