ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মানবাধিকার দর্শনকে ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম।
রোববার (১৫ আগস্ট) দুপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আয়োজনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের জাতির পিতা বাঙালিদের অনেক বেশি ভালোবাসতেন। বাঙালির ভালোবাসাই ছিল সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি বাঙালিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে কখনও মাথা নত করেননি। সেই বাঙালিরা তাকে আঘাত করবে তা তার ধারণার বাইরে ছিল। আজকে জাতি হিসেবে আমাদের ক্ষমা চাওয়ার দিন। তিনি মানবাধিকার রক্ষা ও সমুন্নত করার লক্ষ্যে আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি শিশুদের এতটাই ভালোবাসতেন যে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ প্রনয়নের ১৫ বছর পূর্বেই তিনি বাংলাদেশে শিশু অধিকার আইন প্রণয়ন করেন। তিনি যদি বেঁচে থাকতেন তবে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারত।
কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতির পিতা আমাদের জন্য যা করেছেন তা বলে শেষ করা যাবে না। স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল মানবাধিকারের সংগ্রাম। তিনি সবসময় মানুষের মনে জাগ্রত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কাছে না থাকলেও সবাইকে শক্তি যোগাতেন। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করতে হবে।
এসময় কমিশনের সম্মানিত সদস্য জেসমিন আরা বেগম, মিজানুর রহমান খান, চিংকিউ রোয়াজা জাতির বঙ্গবন্ধুর মানবাধিকার দর্শন ও দেশ গঠনে তার বিভিন্ন অবদান উল্লেখ করেন।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বানে আমি ক্লাস নাইনে থাকাকালে মুক্তিযুদ্ধে যাই। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও এত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি অসহায় মানুষদের সঙ্গে কথা বলতেন। সাধারণ জনগণের জন্য তার ভালবাসা এতেই বোঝা যায়। মানবাধিকারকে তিনি ধারণ করতেন। বিভিন্ন সময় তিনি অসুস্থ থাকলেও তিনি তার কাজ চালিয়ে যান। নানান প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়াউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ধারণ করেছেন সমাজতন্ত্রকে, একইসঙ্গে তিনি ধারণ করেছেন গণতন্ত্রকে। বিবিসিকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন আমার দেশ হবে শোষণহীন দেশ। গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রকে তিনি একইসঙ্গে ধারণ করতে চান।
ডব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন্নাহার মিষ্টি বলেন, জাতির পিতার শক্তি, সাহস, বুদ্ধিমত্তাকে আমাদের ধারণ করা দরকার।
ডিআরআরএর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, “আজকের দিনে জাতির পিতাকে সমূলে ধ্বংস করা হয় যাতে আমরা উঠে দাঁড়াতে না পারি। বঙ্গবন্ধু যেভাবে বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন সেভাবে আর কেউ বাসতে পারবেনা। তাঁকে যারা ভালোবাসেন তারা কাজ করে যান, জনসমক্ষে আসেন না।” ইউএনডিপি’র হিউম্যান রাইটস ফোরামের জেন্ডার এক্সপার্ট বিথিকা হাসান বলেন, “আজ জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জিত হবার দিন। কারণ আমরা আমাদের জাতির পিতাকে এদিন হত্যা করেছিলাম।”
সভার শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।