Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাবজি-ফ্রি ফায়ার বন্ধে আদালতের নির্দেশ, পর্যালোচনার পর ব্যবস্থা

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৬ আগস্ট ২০২১ ২৩:১৭

ঢাকা: আসক্তিতে ডুবে থাকা তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে পাবজি, ফ্রি-ফায়ারসহ এ ধরনের ‘বিপজ্জনক’ সব গেম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানিতে এ আদেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেইসঙ্গে এ বিষয়ে রুলও জারি করা হয়েছে। তবে এসব গেম বন্ধ করা নিয়ে এখনও শঙ্কা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

দেশের অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, লাইকি, পাবজিসহ অনলাইন গেম এবং ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না— তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এ ধরনের অনলাইন গেম এবং অনলাইন স্ট্রিমিং অ্যাপ নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা করার জন্য একটি কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন এবং এ বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী। ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, তরুণ সমাজকে বাঁচাতে দেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম বন্ধের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গেম দুটি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। গত ২৯ মে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, গেম দুটি বন্ধে উদ্যোগ নিচ্ছি। এ বিষয়ে কাজ চলছে। বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্রও একই কথা বলেছিলেন। তবে একটি পক্ষের আপত্তির কারণে তা বন্ধ হয়নি।

ক্ষতিকর এসব গেম বন্ধে হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোমবার (১৬ আগস্ট) ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সারাবাংলাকে বলেন, ‘পত্রিকায় আমরা দেখেছি। আদালত বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। আদেশ হাতে পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়গুলো তা পর্যালোচনা করবে। যদি এককভাবে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হতো তাহলে তারা গেমগুলো বন্ধ করতে পারতো। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ হাতে পাওয়ার পর তারা যদি পর্যালোচনা করে দেখে, এসব গেম বন্ধ করা উচিত, তাহলে তারা বিটিআরসিকে নির্দেশ দেবে। তখন বিটিআরসি এগুলো বন্ধ করবে।’

এর আগে, বিটিআরসির পক্ষ থেকে গেমগুলো বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘বিটিআরসি একক সিদ্ধান্তে কিছু করতে পারে না। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যদি কোনো অপরাধ সংগঠিত হয়, জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি বা সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হলে বিটিআরসি তা বন্ধ করতে পারে।’

আর হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়ে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র সারাবাংলাকে বলেন, ‘এর আগে, আমরা গেমগুলো বন্ধের উদ্যোগ নিলেও তা সম্ভব হয়নি। এখন আদালতের আদেশ হাতে পাওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেব। আদেশে কী আছে তা দেখে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। অফিসিয়ালি অর্ডার হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এখনও অফিসিয়াল অর্ডার হাতে পাইনি।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এসব গেম বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা বিটিআরসির পুরোপুরি রয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়শের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এটি প্রাথমিক নির্দেশনা। পরবর্তী নির্দেশনায় হয়তো টেকনিক্যাল বিষয়গুলোও থাকবে। কিন্তু চাইলেই প্রযুক্তির পুরোটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে সরকার চাইলে এসব বন্ধ করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্টের প্রাথমিক রায়ে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো উল্লেখ নেই। হাইকোর্ট চাইলে প্রযুক্তিবিদদের মতামত নিতে পারে। তবে এসব গেম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব না, নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এসব গেমসের সঙ্গে বাণিজ্যিক একটি বিষয় রয়েছে। একটি পক্ষের স্বার্থ রয়েছে। এই ব্যবসাগুলোর সঙ্গে মন্ত্রী (ডাক ও টেলিযোগ) জড়িত রয়েছেন। বেসিস থেকে তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। এসব গেম ব্যবহারের ফলে প্রচুর ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। এখানেও ব্যবসা রয়েছে। ফলে গেমগুলো বন্ধ করা নিয়ে একটি শঙ্কা থেকেই যায়।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

পাবজি ফ্রি ফায়ার বন্‌ধ মোবাইল গেমস হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর