জিয়ার সমাধিতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ
১৭ আগস্ট ২০২১ ১৩:০৬
ঢাকা: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দলটির নেতাকর্মী সমর্থকেরা। এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিএনপি এবং পুলশের পক্ষ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
ডিএমপির জেতগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা কম থাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের ওপর ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরে পুলিশ কিছু সংখ্যক টিয়ারশেল ছুড়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।’
অবশ্য বেলা পৌনে ১২টার দিকে জিয়ার সমাধি কমপ্লেক্সের ভেতর দাঁড়িয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নব গঠিত কমিটির পক্ষে জিয়ার সমাধিতে ফুলে দিতে আসা নেতাকর্মীদের ওপর বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। এতে ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতারা তাদের অনুসারী ও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে সমাধিতে ফুল দিতে আসেন। সকাল সাড়ে ১১টায় সময় নির্ধারণ থাকলেও নেতাকর্মীরা সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড নিয়ে হাজির হন চন্দ্রিমা উদ্যানে। এ সময় তারা নতুন কমিটির নেতাদের নামে স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে পুলিশ তাদের একদিকে সরে যেতে বললে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। জবাবে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢাকা উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হককে রক্তভেজা পাঞ্জাবিতে দেখা যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম দলের নেতাকর্মীদের শান্ত করেন।
এ সময় আমান উল্লাহ আমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে এসে শহিদ হয়ে গেলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা পিছু হটবে না। আমরা গুলি খেয়ে মরে যেতে প্রস্তুত, তবুও জিয়ার সমাধিতে ফুল দিয়ে তারপর এখান থেকে যাব।’
আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো উসকানি ছাড়াই আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছে পুলিশ। আমি শুধু বিএনপির একজন কর্মীই নই। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক। আমার সঙ্গে এ ধরনের আচরণ, আমার কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে এ ধারণের আচরণ কেউ মেনে নেবে না। একদিন এর বিচার হবে।’
পরে দুপুর ১২টায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চন্দ্রিমা উদ্যানে এসে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়ার সমাধিতে ফুল দেন। এ সময় তিনি এ ঘটনার জন্য পুলিশ দায়ী করেন এবং দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান।
সারাবাংলা/এজেড/এএম