‘চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে’
১৯ আগস্ট ২০২১ ০০:১৮
ঢাকা: শনাক্ত ও মৃত্যু— উভয় দিকে ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই গত ১১ আগস্ট থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আরোপ করা বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়া হয়। আর এই সিদ্ধান্ত সরকার তাড়াহুড়া করে নিয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেই বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৮ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা যখন বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নেই, তখন সেই বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কয়েকজন বিশেষজ্ঞও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সবকিছু বিবেচনা করেই বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। রফতানিমুখী শিল্প কারখানা বাদে সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের জীবন-জীবিকার কথা ভেবে ১৫ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়া হয়। পরে আবার দুই সপ্তাহের জন্য শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে সবকিছু বন্ধ ঘোষণা দিয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। কিন্তু তাতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা যায়নি। পরে শিল্প কারখানা মালিকদের অনুরোধে ১ আগস্ট গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু ঈদে ঘরে ফেরা শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরা নিয়ে পথে পথে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এসময় শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরাতে কয়েক ঘণ্টার জন্য গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
আর এ নিয়ে নানা মহলে সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়। এরইমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়িয়ে ১১ আগস্ট থেকে সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। করোনাভাইাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কমে না আসায় তখন থেকে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। সবশেষ গত শুক্রবার রাতে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহর সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিধিনিষেধ শিথিলতার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা তাড়াহুড়া করেছে। সারাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ থাকার মধ্যে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয় ওই বিবৃতিতে।
উল্লেখ্য, গত তিন দিন ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৭ হাজার ২৪৮ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১৭২ জনের।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ