গনির সঙ্গে কোনো টাকা ছিল না— সাবেক উপদেষ্টার দাবি
২১ আগস্ট ২০২১ ১৩:৩০
আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে উৎখাত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বিপুল পরিমাণ টাকা নয়, বরং শুধু পোশাক নিয়েই দেশ ছেড়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তার সাবেক এক উপদেষ্টা। তিনি জানান, কাবুলে উগ্রবাদী গোষ্ঠী তালেবানের হামলা এত দ্রুত ঘটেছে যে, প্রেসিডেন্ট পালানোর আগে কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাননি। তার সঙ্গে কোনো টাকা ছিল না। আক্ষরিক অর্থেই তিনি শুধু পোশাক নিয়ে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির দেশ ছাড়ার আগের কয়েক ঘণ্টার পরিস্থিতির বর্ণনা দেন তিনি। ওই উপদেষ্টা সিএনএন’কে জানান, শেষ সময়ে কাবুল শহরের উপকণ্ঠে অবস্থানরত তালেবানদের সঙ্গে সমঝোতা করতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট গনি। তবে তালেবান জানিয়েছিল, সরকারকে আত্মসমর্পণই করতে হবে।
এমন অবস্থায় রোববার তালেবানদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন গনি। সেসময় পদত্যাগের জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনা চালাচ্ছিলেন।
সমঝোতা আলোচনা চলাকালেই তালেবানরা শহরে ঢুকে পড়ে। তারা বিভিন্ন প্রবেশ পথ দিয়ে কাবুলে শক্তি বাড়াতে থাকে। তিনি বলেন, ‘আমরা বছরখানেক আগে থেকে গোয়েন্দা তথ্য পাচ্ছিলাম যে, তালেবানরা প্রেসিডেন্ট গনিকে ধরতে পারলে তাকে হত্যা করবে’।
রোববার সকালেই ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ পালিয়ে যান। তিনি উত্তর আফগানিস্তানের পানজশির উপত্যকায় আশ্রয় নেন। রোববার প্রেসিডেন্টের বাসভবনের আশেপাশে গুলিবর্ষণ শুরু হলে বহু কর্মকর্তা যে যার মতো পালাতে থাকেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ঠিক সে সময় আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল শহর রক্ষা করা এবং নাগরিকদের রাস্তায় লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা করা’। তিনি বলেন, ‘সে সময় আমরা যে চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলাম তা এখনও সাবেক আফগান প্রধান নির্বাহী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের মাধ্যমে চলছে’।
রোববার তালেবানের আক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রেসিডেন্ট গনি পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে তিনি উজবেকিস্তানের তেরমেজে যান। সেখানে তিনি এক রাত কাটানোর পর আরব আমিরাতে পাড়ি জমান—জানান ওই কর্মকর্তা।
গনির সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট গনির সঙ্গে কোনো টাকা ছিল না। আক্ষরিক অর্থেই শুধু তার পোশাক নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি’।
উল্লেখ্য যে, গনি পালানোর সময় চারটি গাড়ি ও হেলিকপ্টারে করে বিপুল পরিমাণ অর্থও নিয়ে গেছেন বলে প্রথম প্রচার করে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ। রুশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রচার করে সংবাদমাধ্যমটি।
এর আগে বুধবার রুশ দূতাবাস কর্মকর্তার ওই দাবি ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন আশরাফ গনি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, রক্তপাত এড়াতেই তিনি পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
সারাবাংলা/আইই