Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশাসন ও জনগণের অংশগ্রহণে নদী খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের আহ্বান

সারাবাংলা ডেস্ক
২১ আগস্ট ২০২১ ২২:৪৭

ঢাকা: দল-মত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, সমাজকর্মী, সাধারণ মানুষসহ সবার অংশগ্রহণে দেশের নদ-নদী সুরক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন এক ভার্চুয়াল সংলাপে এ আহ্বান জানান।

শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (এএলআরডি)’র উদ্যোগে এবং ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন, বড়াল রক্ষা আন্দোলন ও স্থানীয় এনজিওদের আয়োজনে ‘নদীর অবৈধ দখল, দূষণ রোধে এবং স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধারে আমাদের করণীয়’ বিষয়ক এই ভার্চুয়াল আঞ্চলিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

মানবাধিকার কর্মী খুশী কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে আলোচনার শুরুতেই শুভেচ্ছা ও স্বাগত বক্তব্য দেন এএলআরডি’র উপ-নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি। এতে দু’টি পৃথক উপস্থাপন করেন বড়াল রক্ষা আন্দোলনের সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান এবং ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলনের সভাপতি এস এম মাহবুবুল আলম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পাবনার জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘ইছামতি নদী উদ্ধারে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আপাতত করোনার কারণে এ অভিযান স্থগিত রয়েছে। তবে ১২০০ কোটি টাকার নদী খনন প্রকল্প খুব শিগগিরই শুরু হবে।’ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই পাবনার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ইছামতি নদী উদ্ধার ও খনন কার্যক্রম আবার নতুন উদ্যমে শুরু করার আশ্বাস দেন তিনি।

এতে নাটোরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটশামীম আহমেদও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় তিনি বলেন, ‘নদী দখল দূষণ রোধ এবং পরিবেশ রক্ষায় সরকারের ২৭টি বিভাগ একসাথে কাজ করে। রাজনৈতিক নেতারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন আর প্রশাসন জনগণের জন্য কাজ করে। কেউ কাউকে দোষারোপ না করে সবাই এক সাথে আসুন নদীকে রক্ষা করি।’

অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সারা বাংলাদেশেই নদ-নদীর অবস্থা একই রকম। নদী কমিশন নদী দখলকারীদের একটি তালিকা প্রকাশ করলেও এখনও পর্যন্ত নদী দূষণকারীদের কোনো তালিকা প্রকাশিত হয়নি। ইছামতি নদী নিয়ে আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই তালিকা তৈরি করে তা আদালতে প্রেরণ করা হয়নি।’

এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছাগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মুখথুবড়ে পড়ে যায়। সাধারণ মানুষের মাঠের আন্দোলনের কিছু অর্জনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়েও বেশকিছু অর্জন আছে। জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজটি করতে হবে।’

পানি অধিকার ফোরামের সদস্য সংস্থা ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাসুদ আলী বলেন, ‘নদী দখলকারী প্রভাবশালীরা এমনই ক্ষমতাবান যে তাদের প্রভাবে অচল হয়ে যায় আইনের নির্দেশনা।’

পানি অধিকার ফোরামের অপর একটি সদস্য সংস্থা নাগরিক উদ্যোগে’র প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে গণশুনানির মাধ্যমে সরকারের গৃহীত প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ের চিত্র তুলে ধরতে হবে। এতে দুর্নীতি হ্রাস পাবে এবং কাজের অগ্রগতি হবে।’

সংলাপের সভাপতি খুশি কবির বলেন, ‘ব-দ্বীপ অঞ্চলের নদীগুলোর ভৌগলিক ও প্রাকৃতিক গুরুত্ব আছে। এই নদীগুলোকে সুরক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের আলোচনা আরও করবো।’ বাংলাদেশের সকল নদী, জলাশয় রক্ষায় আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একসাথে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

আলোচনায় জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন, বড়াল রক্ষা আন্দোলনের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকরা অংশ নেন।

সারাবাংলা/এমও

জনগণের অংশগ্রহণ নদী খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রশাসন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর