ঢাকা: আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনা এবং সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
সরকার গঠনের পর তালেবানদের নেওয়া পদক্ষেপ, সরকার স্থায়ী রূপ পাবে কি না— সেসব বিষয় দেখে এবং নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেইসঙ্গে এই ইস্যুতে জাতিসংঘের দুই পরিষদের ভূমিকা কী হয়, সেটিও দেখতে চায় ইইউ।
আফগানিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা সারাবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক বলেন, ‘সেখানে (আফগানিস্তানে) সরকার গঠনের প্রক্রিয়া এখনও স্পষ্ট নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও এর পরবর্তী সরকার গঠন প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, সেটিও দেখার বিষয়।’
তবে ঢাকায় এক সুইস কূটনীতিক বলেন, ‘আফগানিস্তান ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা অন্যান্য জোটের অবস্থান তুলে ধরার সময় এখনও আসেনি। বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রয়েছে।’
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গত সোমবার সকালে জরুরি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসলেও এ নিয়ে মুখ খোলেননি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যরাষ্ট্র চীন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকেও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কিছুই প্রকাশ করা হয়নি।
এ নিয়ে রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান লিওনিড স্লুটস্কি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ দরকার। যাতে নতুন মানবিক বিপর্যয় রোধ করা যায়।’
এদিকে, তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানকার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ২৪ আগস্ট বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক পরিষদ। জেনেভায় ভার্চুয়ালি এ অধিবেশন ওআইসি ও পাকিস্তান যৌথভাবে ডেকেছে এবং এতে জাতিসংঘের ৮৯ দেশ সম্মতিও দিয়েছে।
এ ধরনের বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এক-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, সুদান, ফ্রান্স, জার্মানি, লিবিয়া, ক্যামেরুন ও উজবেকিস্তানসহ ২৯ দেশ এ প্রস্তাবে সমর্থন দেয়।
আফগান ইস্যুতে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর জোট জি-৭-এর নেতারাও জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। আফগান শরণার্থীদের মানবিক সহায়তার পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবে ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র।