Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রিয় নেত্রীকে শেষবারও দেখতে পায়নি ভৈরববাসী, এখনও মেলেনি বিচার

এম এ হালিম, লোকাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ আগস্ট ২০২১ ১৪:৩৭

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): সংগ্রামী নারী নেত্রী ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২৪ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। সেদিনের পর থেকে ভৈরববাসীর আজও একটাই দাবি কবে, কখন প্রিয় নেত্রী আইভি রহমানের হত্যার বিচার হবে!

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, মৃত্যুর পর প্রিয়নেত্রীর লাশ পর্যন্ত ভৈরববাসী শেষ দেখা দেখতে পারেনি। সেদিন তৎকলীন সরকার সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ দিয়ে ভৈরব শহর অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। এমন নৃশংস জঘন্যতম কর্মকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর ১৭ বছরেও ঘাতকদের বিচারের রায় কার্যকর না হওয়ায় মর্মাহত ও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে ভৈরববাসীর মাঝে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ নিহতদের ঘটনায় ঘাতকদের বিচারিক রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি ভৈরববাসীর।

বিজ্ঞাপন

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের একান্ত সচিব ও আইভি রহমানের দেবর মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘আইভি রহমানকে হারিয়ে ভৈরব-কুলিয়ারচরবাসী মর্মাহত, অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এ ক্ষতি পূরণ হবার নয়।’ তাই আইভি রহমান রহমানসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারিদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান তিনি।

ভৈরব উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘সেদিন তার লাশটি পর্যন্ত ভৈরববাসী শেষ দেখা দেখতে পারেনি। আমরা গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেক জিয়াসহ ঘাতকদের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।’

ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ বলেন, ‘২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমাদের নেত্রী আইভি রহমান গুরুতর আহত হন। ২৪ আগস্ট তার মৃত্যুর পর ভৈরব থেকে যে আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ দানা বেঁধে উঠেছিল, সেখান থেকেই ১/১১ এর সরকার পতনের আন্দোলনের ভীত রচনা হয়েছিল। সেখান থেকেই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পতনের রচনা শুরু হয়েছিল। শহীদ আইভি রহমানের রক্তের বিনিময়ে ও জিল্লুর রহমানের আপোষহীন নমনীয়তার কারণে আজ আওয়ামী লীগ ৩য় মেয়াদে ক্ষমতায়।’ তিনি তারেক রহমানসহ গ্রেনেড হামলাকারীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।

কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা মির্জা সোলায়মান জানান, তৎকালীন ফ্যাসিবাদী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মদদে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূণ্য করতে চেয়েছিল। সেই নারকীয় হামলায় ৩ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ২৪ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর ঢাকায় জানাজার নামাজের সময় কিছু অপরিচিতি লোক লাশ ঘিরে রেখেছিল। যাতে তার লাশ ভৈরবে আনতে না পারি। এমনকি লাশ দাফনের জন্য ভৈরবে আনতে গেলে পথিমধ্যে থেকে লাশ ছিনিয়ে নিয়ে তাদের তত্ত্বাবধানে বনানীতে তাতে দাফন করা হয়। মৃত্যুর ১৭ বছর পার হয়ে গেলেও বিচারের রায় কার্যকর হয়নি। দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করার জন্য বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

এদিকে, নেত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভৈরবে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে কোরআন তেলাওয়াত, শোক র‌্যালি, আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও কাঙালি ভোজসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

আইভি রহমান ছিলেন ভৈরবের সবার প্রিয় ‘আইভি আপা’। প্রিয় নেত্রীকে হারিয়ে ভৈরববাসী আজও শোকাহত। আইভি রহমান নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৫৮ সালে ২৭ জুন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ভৈরবের কৃতি সন্তান জিল্লুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পরও তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৮ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন।

সারাবাংলা/এমও

আইভি রহমান আওয়ামী লীগ ভৈরববাসী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর