Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোরিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা: সংকট উত্তরণে চলছে কূটনৈতিক তৎপরতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ আগস্ট ২০২১ ১৪:০৯

ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি নোভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কর্তৃক বাংলাদেশি কর্মীদের ওপর আরোপিত ভিসা নিষেধাজ্ঞার ফলে সৃষ্ট সংকট উত্তরণে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ গত সোমবার (২৩ আগস্ট) হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট অব কোরিয়ার (এইচ আর ডি কোরিয়া) প্রেসিডেন্ট ও মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিউলে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দ্রুতই বাংলাদেশি কর্মীদের ওপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে ওই বৈঠক থেকে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মীরা দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে নিজ নিজ কাজে যোগ দিতে পারবেন।

জানা গেছে, বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কোরিয়ায় প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি কাজ করছেন। এদের উল্লেখযোগ্য অংশ উচ্চশিক্ষিত, প্রশিক্ষিত ও ভালো বেতনের চাকরি করছেন।

এদের মধ্যে যেসব এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) কর্মী করোনার আগে ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিলেন, তাদের অনেকেই ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে কোরিয়ায় ফিরে যেতে পারেননি। গত দুই বছর ধরে আটকে পড়া এমন দক্ষ কর্মীর সংখ্যা হাজারের কাছাকাছি এবং নতুন করে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন আরও প্রায় দুই হাজার ইপিএস কর্মী।

দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) সারাবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মেক্সিকোতে সদ্য যোগ দেওয়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম সোমবার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা একবার তুলে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষার কথা জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব হয়নি।’

সূত্রগুলো বলছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দোক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করা বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ১৬ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইপিএস কর্মীদের দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় কূনৈতিক তৎপরতা। ইপিএস কর্মীদের ওপর দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কর্তৃক আরোপিত ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস অব্যবহাতভাবে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবারের বৈঠক প্রসঙ্গে আবিদা ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গেও আমাদের বিস্তর আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এসব বৈঠকে আমরা বাংলাদেশের কর্মীদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও তাদের কর্মস্থলে যোগদানে সহযোগিতা চেয়েছি। তারা আমাদের প্রস্তাব বিবেচনায় রেখেছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব এবং আটকে পড়া কর্মীরা খুব শিগগরিই কোরিয়া ফিরে যেতে পারবেন।’

ইপিএস কর্মী ফয়সাল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যারা করোনার শুরুতে তিন মাসের ছুটিতে এসেছি, তাদের ছুটি দেড় বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। মালিক তো আমাদের অপেক্ষায় থাকবে না। যেসব দেশে কোরিয়ার ভিসা নিষেধাজ্ঞা নেই, সেসব দেশ থেকে তারা লোক নিয়ে নিয়েছে। আমাদের কয়েক জনকে মালিক না করে দিয়েছে। এখন আমরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি।’

বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলেন এসব কর্মী। ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৩৩ জন কর্মী পাঠিয়েছে বোয়েসেল। করোনার কারণে দেশে এসে আটকে পড়া কর্মীদের ফেরত পাঠাতে এবং তাদের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে বেশ উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে বোয়েসেল।

সারাবাংলা/টিআই/এজেড/এসএসএ

কোরিয়ায় ভিসা নিষেধাজ্ঞা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর