হঠাৎ বৃষ্টিতে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল, নামাজ হয়নি আল-আকসা মসজিদে
২৫ আগস্ট ২০২১ ১৯:১০
খাগড়াছড়ি: রাতে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানি উঠেছে মানুষের ঘর, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। পানি না নামায় খাগড়াছড়ি শহরের গঞ্জপাড়া এলাকার আল-আকসা মসজিদে ফজর ও জোহর ওয়াক্তের নামাজ পড়তে পারেননি মুসল্লিরা।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে খাগড়াছড়িতে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। কখনো হালকা, কখনো ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে রাতভর। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতেই জেলার বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
আল-আকসা মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মাঈনুদ্দিন জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বর্ষণে মসজিদে পানি উঠে যায়। ফলে ফজর ও জোহরের নামাজের জামাত আয়োজন করা যায়নি।
মসজিদের পাশে ড্রেনেজ সিস্টেম না থাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয় উল্লেখ করে পেশ ইমাম বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ড্রেনেজ সিস্টেম ঠিক করার বিষয়ে বারবার আমাদের আশ্বস্ত করে আসছেন। কিন্তু কোনো সুফল মেলেনি। গত বছরও এরকম বেশ কয়েকদিন মসজিদে জামাত আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
গঞ্জপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও মেম্বার সৈয়দ আলী বলেন, গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ড্রেন করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বরাদ্দের অভাবে তা করে দিতে পারিনি। তবে চলতি বছর আল-আকসা মসজিদকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষার জন্য জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গোলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি ত্রিপুরাও আল-আকসা মসজিদের জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেন।
এদিকে, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের আশপাশে কমপক্ষে ১৫টি এবং পুরো জেলায় প্রায় ৫০টি গ্রামে পানি উঠেছে। অনেক স্থানে ঘর-বাড়ির ভেতরেও ঢুকেছে পানি। এর ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও মানুষ।
খাগড়াছড়ি শহরের এপিবিএন মুসলিম পাড়া এলাকার রবিউল ইসলাম, রূপনগর এলাকার সজল দাশ, রাজ্যমনি পাড়া এলাকার নেইম্রা মারমা ও সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুল হকের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। তারা বলেন, ঘুম থেকে উঠেই ঘরে পানি দেখে হতভম্ব তারা। মঙ্গলবার মধ্যরাতে শুরুর পর টানা বৃষ্টিতে তাদের অনেকেরই ঘরের অনেক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। গবাদিপশুর ঘরেও পানি উঠে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুক্তা চাকমা বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কৃষি জমির কিছু সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় ও পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পৌরসভার অধীন কয়েকটি জায়গায় রাস্তার ওপরে পাহাড় ধসে পড়েছে, যা পৌরসভার লোকজন সরাচ্ছে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আনার কাজ চলছে। তবে বৃষ্টি কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকলে পানি নেমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
সারাবাংলা/টিআর