খোঁজ মেলেনি ৩ দিনেও, নালায় আবর্জনায় আটকে থাকার ধারণা
২৭ আগস্ট ২০২১ ২১:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে মৌসুমি বৃষ্টিতে নালায় পড়ে প্রবল স্রোতে ভেসে যাওয়া ব্যক্তির খোঁজ মেলেনি গত তিনদিনেও। উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ধারণা, নালার মধেই ময়লা-আবর্জনার মধ্যে কোথাও তার ‘লাশ’ আটকে আছে। এদিকে স্বজন হারানো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
গত দুইদিনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবারও (২৭ আগস্ট) দিনভর নগরীর মুরাদপুর থেকে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নালা ও খালে তল্লাশি চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও রেসকিউ টিম। শনিবারও তল্লাশি চালানো হবে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিন উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক হাসানুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিখোঁজের প্রায় ৬০ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। আমরা ডুবুরি টিম ও রেসকিউ টিমের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে তল্লাশি চালিয়েছি। যখন তিনি নালায় পড়ে যান, তখন প্রচুর বৃষ্টিপাত ছিল। পানির স্রোত ছিল। সেই স্রোতে তিনি নদীতে ভেসে যেতে পারেন। তবে সাধারণত ২৪ ঘণ্টা পরই লাশ ভেসে ওঠে। বড়জোড় ৩৬ ঘণ্টা, এর বেশি সময় লাশ পানির নিচে থাকে না। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের ধারণা, যেহেতু নালায় প্রচুর ময়লা-আবর্জনা, লাশ সেখানে কোথাও আটকে আছে। না হলে সেটা ভেসে উঠত।’
গত বুধবার (২৫ আগস্ট) প্রবল বৃষ্টির মধ্যে নগরীর মুরাদপুরে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন আনুমানিক ৫৫ বছর বয়সী সালেহ আহমদ। তার বাড়ি পটিয়া উপজেলার মনসা গ্রামে। নগরীর চকবাজার কাঁচাবাজারে নিজস্ব দোকানে তিনি সবজি বিক্রি করতেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে গ্রামে থাকেন। ছেলে পশ্চিম পটিয়া এ জে চৌধুরী ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মেয়ে মনসা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে পড়েন।
মাইজভাণ্ডার শরীফের ভক্ত সালেহ আহমদ ফটিকছড়িতে মাজারে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তার স্ত্রী ও সন্তানেরা বর্তমানে নগরীর আছাদগঞ্জে তার শ্বশুরবাড়িতে আছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীর আছাদগঞ্জের কলাবাগান এলাকায় ওই বাসায় গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এসময় তিনি স্ত্রী-সন্তানদের সান্ত্বনা দেন এবং মর্মান্তিক এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
জানতে চাইলে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমি উনার (সালেহ আহমদ) পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছি। তাদের আশ্বস্ত করেছি যে, আমি সবসময় তাদের বিপদে-আপদে তাদের পাশে থাকব। তাদের পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। উনারা সালেহ আহমদের সন্ধান চেয়েছেন। আমি জেলা প্রশাসক ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে উদ্ধারে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছি।’
নিখোঁজ সালেহ আহমদের ছেলে সাদেকুল্লাহ মাহিন আহমদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেয়র সাহেব এসেছিলেন। তিনি আমার আব্বাকে উদ্ধার করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
সারাবাংলা/আরডি/একে