Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগ্নেয়াস্ত্রসহ গাড়ি ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ আগস্ট ২০২১ ১৫:১৫

ঢাকা: র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূল সমন্বয়কসহ পাঁচ সদস্যকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে। এসময় ছিনতাই করা তিনটি পিকআপ ও একটি সিএনজি উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব’র গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খোন্দকার আল মইন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শুক্রবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে র‌্যাব-৪ এর অভিযানে নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে গত ১১ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা থেকে গাড়ি ছিনতাই চক্রের পাঁচজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ওই অভিযানে চারটি পিকআপ ভ্যানও উদ্ধার করা হয়। আগের গ্রেফতার হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার পাঁচ ছিনতাইকারী হলেন- মূলহোতা মো. আজিম উদ্দিন (৩৮), মো. রফিক উল্লাহ (২৬), মো. সেলিম (৫০), মো. কামরুল হাসান (২৬), এবং (৫) এবং ওমর ফারুক (২৫)। উদ্ধার করা মালামালগুলো হলো- তিনটি পিকআপ, একটি সিএনজি, একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, তিনটি ছুরি, একটি চাইনিজ কুড়াল, ছয়টি মোবাইল এবং নগদ ১২ হাজার টাকা।

র‌্যাবের পরিচালক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছে- তারা সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের সদস্য। এই
সংঘবদ্ধ চক্রের সঙ্গে ১৫-২০ জন জড়িত। এই চক্রের মূলহোতা ও সমন্বয়ক হচ্ছে আজিম উদ্দিন। গত ১১ আগস্ট অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা তার অন্যতম সহযোগী। গত ৫-৬ বছর ধরে এই দলটি ছিনতাই করে আসছে। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এরইমধ্যে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই করেছে। এর মাধ্যম চক্রটি এ পর্যন্ত কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

আল মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সাধারণত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটসহ নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের আশপাশের এলাকায়
পিকআপ, সিএনজি ছিনতাই করে থাকে। কৌশল হিসেবে তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করে থাকে।

প্রথম দলের কাজ:

প্রথমত এই দলের সদস্যরা বিভিন্ন ছদ্মবেশে গাড়ি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। মূলত গাড়ি পার্কিং, গতিবিধি, চালক ও মালিক সম্পর্কে পূর্বেই তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।

দ্বিতীয় দলের কাজ:

মূলহোতা বা মূল সমন্বয়কের নির্দেশনা মোতাবেক এই দলটি মাঠ পর্যায় থেকে গাড়ি ছিনতাই করে থাকে। এছাড়াও তারা ক্ষেত্র বিশেষে চালকদের প্রলুব্ধ করে ছিনতাই নাটক সাজিয়ে থাকে। এই দলে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সদস্যরা থাকে। যেমন- অভিজ্ঞ চালক ও মেকানিক ইত্যাদি। যাতে নির্বিঘ্নে ছিনতাই বা চুরি করা গাড়ি নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে পারে। এছাড়া পার্কিং অবস্থায় গাড়ির লক সহজে ভাঙা যায়। এ দলের সদস্যরা গাড়ি ভাড়ার ছদ্মবেশে ভুক্তভোগী চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর পথিমধ্যে গাড়ীর চালককে খাদ্য দ্রব্যের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ সেবন করান। পরে গাড়ির চালককে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তার মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়।

তৃতীয় দলের কাজ:

ছিনতাই করা গাড়ি গ্রহণ করার পর এরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে রাখে। এরপর ভুক্তভোগী চালকের মোবাইল হতে মূল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা দাবি করে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে তারা টাকা পাওয়ার পর চোরাই গাড়ি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেয়, যা মালিক সংগ্রহ করে নেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা মালিককে প্রতারিত করে থাকে।

চতুর্থ দলের কাজ:

নির্দিষ্ট কয়েকদিন ছিনতাই হওয়া গাড়ি লুকিয়ে রাখার পর মূল সমন্বয়কের নির্দেশনা মতে নির্দিষ্ট ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়। যেখানে গাড়ির রং পরিবর্তন করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিচ্ছিন্ন করা হয়। যা পরবর্তীতে কম মূল্যে বিক্রি করা হয়। এছাড়াও চোরাই গাড়ির যন্ত্রাংশ সমূহ অন্য একটা গাড়িতে এবং ভূয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট প্রতিস্থাপন করে থাকে, যাতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

বিজ্ঞাপন

পঞ্চম দলের কাজ:

মূল সমন্বয়ক নিজেই এই দলের মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। তার কয়েকজন সহযোগী দ্বারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে। সাধারণত তারা বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে। পরে সেগুলো বিক্রি হওয়া পর্যন্ত ভাড়ায় দেওয়া থাকে। উল্লেখ্য, কমমূল্য হওয়ার কারণে এই চোরাই বা ছিনতাই করা গাড়ির একটি চাহিদাও রয়েছে। এই যানবাহন সমূহ মাদক পরিবহনেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃতদের সিন্ডিকেটের মূলহোতা ও সমন্বয়ক গ্রেফতারকৃত আজিম। সে সকল কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব, সমন্বয়, বণ্টন ও ছিনতাই করা গাড়ির বিক্রয় বা ভাড়ার ব্যবসা করে। গ্রেফতারকৃত রফিক ও ফারুক নিজ গ্যারেজসহ বেশকয়েকটি গ্যারেজে গাড়ির রং পরিবর্তন করে থাকে। এরা ক্ষেত্র বিশেষে সশরীরে সম্পৃক্ত থেকে গাড়ি ছিনতাইয়ে কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে। গ্রেফতারকৃত সেলিম ও কামরুল যথাক্রমে পিকআপ ও সিএনজি’র দক্ষ চালক। তারা ছিনতাইয়ে মূলদলে যুক্ত থেকে ছিনতাইয়ে অংশগ্রহণ করে। গ্রেফতারদের নামে ঢাকা, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে একাধিক মামলা রয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

গাড়ি ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতার টপ নিউজ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বিপদসীমার ওপরে পানি, ৪৪ জলকপাট খোলা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৬

তৃতীয় দিনের খেলাও পরিত্যক্ত
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৪

সিটিকে সরিয়ে শীর্ষে লিভারপুল
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২০

পদ্মায় কমেছে পানি, থামছে না ভাঙন
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৯

সম্পর্কিত খবর