‘ওয়েল ডান—বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ডালিমকে মেজর জিয়া’
২৮ আগস্ট ২০২১ ১৫:২০
ঢাকা: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর মেজর ডালিম রিপোর্ট করতে গেলে মেজর জিয়া অভিনন্দন জানিয়ে তাকে বলেন—‘ওয়েল ডান, মেজর ডালিম! য়ু হ্যাভ ডান আ গ্রেইট জব।’
সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র তো অবশ্যই ছিল। কয়েকটি দূতাবাসের সঙ্গে খুনিদের যোগাযোগ ছিল। আমি ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক, বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন এলে সব কথা আমি বলতে পারি না। যেটা আপনারা বলতে পারবেন, সেটি আমি বলতে পারব না। তবে সত্যটা তো বেরিয়ে এসেছে।’
শনিবার (২৮ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিজিস্টার ম্যানেজমেন্ট ইস্টটিটিউড-এর পরিচালক খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ।
আলোচনা সভায় ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ড. আবু মোহাম্মদ দেলওয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন: সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে: ওবায়দুল কাদের
মেজর জিয়াউর রহমানের লাশ-বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হত্যা হত্যাকে ডেকে আনে। পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দৌলাকে যারা হত্য করেছিল, তাদের একজনেরও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। বেশি দিন লাগেনি বঙ্গবন্ধুকে যে বুলেট হত্যা করেছে, জিয়াকেও সেই বুলেটে চলে যেতে হয়েছে. আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, ফখরুল সাহেব আজও জবাব দেবেন; তিনি বলেছেন, হাজার-হাজার মানুষ জিয়ার জানাজা পড়েছে। হাজার হাজার লোক জানাজা পড়া আর কফিনে লাশ থাকা, না থাকা কি এক কথা? মানুষ নিহত প্রেসিডেন্টের জন্য জানাজা পড়তে এসেছিলেন। সেই কফিনে যে প্রেসিডেন্ট নেই তা তো আর মানুষ তো জানত না। লাশ নিয়ে বিতর্ক করতে চাই না। তবে এইটাই সত্য।`
বিএনপি ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খুনি ঘাতকদের নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হলো বিএনপি। ইতিহাসে কার কী ভূমিকা আমরা সবাই জানি। অগণাতান্ত্রিক পথে বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়। শেখ হাসিনার অদম্য অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়। বারো বছর আগের বাংলাদেশকে আজকের বাংলাদেশ মিলিয়ে দেখবেন৷ এগুলো সহ্য করতে না পারে তারা আজ ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করেছিলো, এখন বঙ্গবন্ধু-কণ্যার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চায়।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে বলেন, ‘এখন কিন্তু কন্টেক্সট ভিন্ন! আগে বলা যেতো, এই লোক জামায়াত করে, এই লোক শিবির। আগে এভাবে ডকুমেন্টেশন নেই। এখন তো অনেক দল নেই। কিন্তু মানুষগুলো তো আছে।’
তাই আগের দৃষ্টিভঙ্গিতে এখন বিচার করলে চলবে না। সংগঠন দিয়ে তাদের আইডেন্টিফাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কে স্বাধীনতা বিরোধী, কে পাকিস্তানপন্থী, কে সাম্প্রদায়িক শক্তির অংশ—তা নির্ণয় করতে নতুন মাত্রার সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি দরকার। আমাদের, আপনাদের নতুন মাত্রায় ভাবতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকরা, সহ-সভাপতি আনোয়ার-উল-ইসলাম চৌধুরীসহ অনেকে।
সারাবাংলা/আরআইআর/একে