চট্টগ্রামে ৩ হাজার শ্রমিক পেলেন করোনার ভ্যাকসিন
২৮ আগস্ট ২০২১ ১৯:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের দুটি রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল সিইপিজেড ও কর্ণফুলী ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিকদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রথমদিনে তিন হাজারেরও বেশি শ্রমিক ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় দুই ইপিজেডে কর্মরত দুই লাখেরও বেশি শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে একই সময়ে সিইপিজেড ও কর্ণফুলী ইপিজেডের শ্রমিকদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে।
সিইপিজেডের ১৫১ চালু কারখানায় এক লাখ ৬০ হাজারের মতো শ্রমিক কর্মরত আছেন। এর মধ্যে শনিবার দুই হাজার শ্রমিক করোনার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন। অন্যদিকে কর্ণফুলী ইপিজেডে ৫০টি কারখানায় কাজ করেন প্রায় ৭৫ হাজার শ্রমিক। এর মধ্যে এক হাজার ২৯৮ জন শ্রমিক করোনার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন।
সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মসিউদ্দিন বিন মেজবাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন, এসএমএস এবং ভ্যাকসিন প্রদান-সবকিছু এখান থেকেই করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় আমরা শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দিচ্ছি। প্রথমে বড় বড় কারখানা যেগুলোতে বেশি শ্রমিক কাজ করে, তাদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হচ্ছে। প্রথমদিনেই আমরা ২০০ ডোজ দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে এখানে কর্মরত সব শ্রমিককে
ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে।’
প্রথমদিনে শনিবার সিইপিজেডের প্যাসিফিক জিনসের কারখানার শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। কারখানার ভেতরে বুথ তৈরি করে সেখানে শ্রমিকদের লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে যাদের ইতোমধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে তাদের প্রথমদিনে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
বেপজা হাসপাতালের পাশাপাশি দুই ইপিজেডে বিভিন্ন কারখানায় বুথ স্থাপন করে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এজন্য শ্রমিকদের টিকা নিতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার ভোগান্তি পোহাতে হয়নি।
কর্ণফুলী ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ এনামুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘যারা নিজ উদ্যোগে নিবন্ধন করেছেন, তাদের পাশাপাশি আমরাও নিবন্ধনের ব্যবস্থা করেছি। নিবন্ধনের পর সঙ্গে সঙ্গেই এসএমএস পেয়ে যাচ্ছেন। প্রথমদিনে কর্ণফুলী ইপিজেডে ১২৯৮ জন করোনার প্রথম ভ্যাকসিন নিয়েছেন। কারও কোনো সমস্যা
হয়নি। সুন্দরভাবে ভ্যাকসিনদান কার্যক্রম চলছে।’
প্রথম দফায় দুই ইপিজেডের ৫০ হাজার শ্রমিককে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। তাদের চীনের সিনোফার্মার ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইপিজেড এলাকায় অনেক শ্রমিক ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই এতদিন এসএমএস পাননি। তাদের আমরা টিকা দেওয়া শুরু করেছি। ইপিজেডের ভেতরেই বিশেষ ব্যবস্থাপনায় তাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রথম দফায় ৫০ হাজার ডোজ টিকা দেব। এরপর টিকাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে সেখানে আরও শ্রমিকদের দেব। দুই ইপিজেড ও আশপাশের কারখানায় দুই লাখের বেশি শ্রমিক আছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা আমাদের আছে।’
পোশাকসহ কল-কারখানার শ্রমিকদের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজও একই প্রক্রিয়ায় ইপিজেডের ভেতরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
সারাদেশে গত ফেব্রুয়ারিতে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। ঢাকা-গাজীপুরসহ বিভিন্নস্থানে শ্রমিকদের আলাদাভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম গত জুলাইয়ে শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামে এই প্রথম শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ